অথবা, মুসলিম দর্শন কিভাবে ভারতীয় প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত?
অথবা, মুসলিম দর্শনে ভারতীয় প্রভাব তুলে ধর।
অথবা, মুসলিম দর্শনে ভারতীয় প্রভাব আলোচনা কর।
অথবা, মুসলিম দর্শনে ভারতীয় প্রভাব কতটুকু? সংক্ষেপে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : কুরআন ও হাদিসের আলোকে আল্লাহর অস্তিত্ব, জ্ঞানতত্ত্ব, জীবন, আত্মা, ইচ্ছার স্বাধীনতা প্রভৃতি বিষয়ে যৌক্তিক প্রজ্ঞাভিত্তিক আলোচনাই হলো মুসলিম দর্শন। কুরআন ও হাদিসের মূলনীতির আলোচনার মধ্যেই মুসলিম জাতির চিন্তার প্রথম উন্মেষ ঘটে, যা তাদেরকে নতুন আবিষ্কার উদ্ভাবনী ও ধ্যান ধারণার পথে নিয়ে যায়।
মুসলিম দর্শনে ভারতীয় প্রভাব : যেসব বিষয় মুসলিম দর্শনের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করেছিল সেগুলোর মধ্যে ভারতীয় প্রভাবের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে ভারতীয় চিন্তার স্রোতসমূহ মুসলমানদের কাছে পৌঁছার পরবর্তী এক পর্যায়ে বিশেষত আব্বাসীয় শাসনামলে ইসলামে দরবেশ ভ্রাতৃত্ব ও মরমিভাব ধারার উদ্ভবের মূলে ছিল ভারতীয় প্রভাব। আব্বাসীয় খলিফাদের রাজত্বকালে ভারতীয় চিন্তাধারার সাথে মুসলমানদের যোগাযোগ ঘটে। বলা হয়ে থাকে, ইসলামের মরমী ও দরবেশী ভাবধারা ভারতীয় প্রভাব হতে উদ্ভূত হয়েছে। কিন্তু আমরা পর্যালোচনা করলে দেখতে পাব যে, ইসলামি মরমিবাদে পারসিক প্রভাব যেমন নেই তেমনি নেই ভারতীয় প্রভাবও কেননা বৌদ্ধ দর্শনে নির্বান ও সুফিদর্শনের ফান ও জিনিস নয়। প্রথমটি যেখানে নঞর্থক সেখানে দ্বিতীয়টি সদর্থক। ফলে আমরা বলতে পারি যে, মুসলিম দার্শনিকরা অন্যন্য চিন্তা দ্বারা বিশেষ করে
ভারতীয় চিন্তাবিদদের সাথে পরিচিত হয়েছেন, কিন্তু তার দ্বারা গুরোপুরি প্রভাবিত হয়েছেন তা বলা চলে না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হাজ্জাজ বিন ইউসুফের শ্রীলংকা আক্রমণের মধ্য দিয়ে মুসলমানরা ভারতবর্ষে তাদের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে। পরে ধীরে ধীরে তাদের চিন্তা চেতনা ও যুক্তিবাদিতার দ্বারা প্রভাবিত৷ হয়। ইসলামের অসাম্প্রদায়িকতা ভারতে শ্রেণীতিরিক্ত জনগোষ্ঠীকে নতুন ধরনের চিন্তার খোরাক জোগায়। সুতরাং মুসলিম
দর্শনে ভারতীয় প্রভাব অনস্বীকার্য।