অথবা, মুসলিম দর্শনে গ্রিক দর্শনের প্রভাব বলতে কি বুঝ?
অথবা, মুসলিম দর্শনে গ্রিক দর্শনের প্রভাব আলোচনা কর।
অথবা, মুসলিম দর্শন কিভাবে গ্রিক দর্শন দ্বারা প্রভাবিত আলোচনা কর।
উত্তরা৷ ভূমিকা : কুরআন ও হাদিসের আলোকে আল্লাজ অস্তিত্ব, জ্ঞানতত্ত্ব, জীবন, আত্মা, ইচ্ছার স্বাধীনতা প্রভৃতি বিষয়ে যৌক্তিক ও প্রজ্ঞাভিত্তিক আলোচনাই হলো মুসলিম দর্শন। কুরআন ও হাদিসের মূলনীতির আলোচনার মধ্যেই মুসলিম জাতির চিন্তার প্রথম উন্মেষ ঘটে, যা তাদেরকে নতুন আবিষ্কার উদ্ভাবনী ও ধ্যান ধারণার পথে নিয়ে যায়।
মুসলিম দর্শনে গ্রিক দর্শনের প্রভাব : মুসলিম দর্শনের ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে বাইরের প্রভাব যতটুকু প্রভাব কার্যকরী হয়েছে তার মধ্যে গ্রিক দর্শনের প্রভাব অগ্রগণ্য। গ্রিক দর্শনের পীথাগোরাস, প্লেটো, এরিস্টটল ও নব্য প্লেটোবাদীদের দর্শন মুসলিম দার্শনিকদের দর্শন চিন্তার রসদ সরবরাহ করে। খলিফা আল মামুনের সময়েই মুসলমানদের মধ্যে গ্রিক দর্শন পঠন পাঠন শুরু হয়। শুধু তাই নয়, কয়েকটি বিশেষ গ্রন্থ আরবিতে ভাষান্তরিত হয়। আর এ সময়েই ফালাসিফা চিন্তাগোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে। মধ্যযুগের গতিশীল, সৃষ্টিশীল জাতি হিসেবে মুসলিম চিন্তাবিদগণ বাহির হতে যা নিয়েছে তার চেয়ে দিয়েছে অনেক বেশি। বলা হয়ে থাকে, আলেকজান্ডারের অভিযানের পর চিন্তাধারা প্রাচ্যের দেশসমূহে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর রাজ্যসমূহ সেলুকাস ও টলেমীর ন্যায় দু’ভাগে ভাগ করে নেন। এশিয়া মহাদেশের রাজ্যগুলো সেলুকাসের ভাগে পড়ে এবং তার নিয়ন্ত্রণাধীন সেলুসিয়া ও এন্টিওক হুজুর পাক (স) এর ইন্তিকালের পরিণত হয়। গ্রিক শিক্ষা ও কৃষ্টির কেন্দ্রে অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে গ্রীক দর্শন ও বিজ্ঞান শিক্ষার কেন্দ্রগুলো মুসলমানদের শাসনাধীনে চলে আসে এবং এর ফলে মুসলমানরা গ্রিক চিন্তার প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসে। আব্বাসীয় শাসনামলে আল মামুনের রাজত্বকালে বিভিন্ন গ্রিক গ্রন্থ অনূদিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলিম দর্শনে গ্রিক দর্শনের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের মতে, কি দার্শনিক কি সংস্কৃতি চর্চাকারী সকলেরই দুটি জিনিস প্রয়োজন; যথা : সম্পদ ও অবসর। সুতরাং
প্রাচ্য দেশের মধ্যে গ্রিক জ্ঞান বিজ্ঞানের চিন্তাধারা সর্বশ্রেষ্ঠ কেন্দ্র বলে খ্যাত লাভ করে।