অথবা, মুসলিম দর্শনের বিরুদ্ধে একটি আপত্তি লিখ এবং সেটি খণ্ডন কর।
অথবা, মুসলিম দর্শনের একটি অভিযোগ লিখে সমলোচনা কর।
অথবা, সমালোচনাসহ মুসলিম দর্শনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ উত্থাপন কর।
অথবা, মুসলিম দর্শনের বিরুদ্ধে যে কোন একটি অভিযোগ উল্লেখ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : মুসলিম দর্শন হলো মুসলিম জাতির চিন্তা ও চেতনার ধারা। এ দর্শন সামগ্রিক মুসলিম জগৎ ও জীবনকে ব্যাখ্যা করে । মুসলিম দর্শন বলতে আমরা জীবন ও মূল্যবোধ বিষয়ক এমন একটি আদর্শকে বুঝবো, যা কুরআন ও হাদিসে উত্থাপিত ও যা মুসলিম জাতির ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে সে আদর্শ থেকে বিকশিত।
মুসলিম দর্শনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ/আপত্তি : পাশ্চাত্য দার্শনিকগণ মুসলিম দর্শনের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করেছেন। তারা মুসলিম দর্শনের সম্ভাব্যতাকে অস্বীকার করেন। তারা মুসলিম দর্শনের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করেন তাদের মধ্যে থেকে একটি অভিযোগ আলোচনা করা হলো :
প্রথম অভিযোগ : শক্তি প্রয়োগে প্রচারিত ধর্ম ইসলাম। ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে কোন দর্শন থাকতে পারে না। এদের মধ্যে দার্শনিক ভিত্তি আছে বলে মনে হয়। প্রথম অভিযোগ সম্পর্কে বলা যায় যে, এটি সত্য নয়। কারণ ইসলাম অর্থ শান্তি এবং ইসলাম ধর্ম হলো শান্তির ধর্ম। হযরত মুহাম্মদ (স) ইসলাম ধর্ম প্রচার প্রসঙ্গে তাঁর অনুসারীদের কখনো বলেননি যে কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করলে তাদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হবে। পবিত্র কুরআনের ভাষা অনুসারে তিনি বল প্রয়োগের কথা বলতে পারেন না।.কারণ কুরআনে বলা আছে যে, “ধর্মের কোন জোর জবরদস্তি নেই। যার ইচ্ছা যে গ্রহণ করুক বা যার ইচ্ছা সে বর্জন করুক; তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম এবং আমার জন্য আমার ধর্ম।” হযরত মুহাম্মদ (স) এর কৌশল ছিল সত্যকে জনগণের মাধ্যমে তুলে ধরা। তিনি কখনো ইসলাম প্রচারের জন্য শক্তি প্রয়োগের কথা বলেন নি। তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য অনেক নির্যাতন সহ্য করেছেন। ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তিনি তরবারি চালান নি। পরবর্তীতে তিনি মক্কা বিজয়ের পর সমস্ত শত্রুদের ক্ষমা করে দেন। তাঁর ক্ষমতা এতই উদার ছিল যে, তাঁর মহানুভবতা দেখে পরাজিত শত্রুরা স্বেচ্ছায় দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলিম দর্শনের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করার পর কারো মনে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়। যে দর্শনের হাজার বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত ইতিহাস আছে সে সম্পর্কে সম্ভাব্যতার কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা সমীচীন নয়।