অথবা, মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, কত তারিখে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়? সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
অথবা, ১৯৭১ সালের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের বর্ণনা দাও।
অথবা, ১৯৭১ সালের মুজিবনগর সরকার গঠন সম্পর্কে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা : বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক উজ্জ্বল অধ্যায় হলো এ মুজিবনগর সরকার। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অর্থাৎ প্রবাসী বাংলাদেশের সরকার মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত।
কখন গঠিত হয় : ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বর্তমান মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে এ সরকার শপথ গ্রহণ করে। বৈদ্যনাথতলার বর্তমান নাম মুজিবনগর। একই সাথে এখানে যে সরকার গঠিত হয় তা মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। এ শপথ অনুষ্ঠানে দেশি বিদেশি ১২৭ জন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। সরকারের নেতৃবৃন্দকে শপথ পাঠ করান
অধ্যাপক এম. ইউসুফ আলী। মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রিসভা: মুজিবনগর সরকারের মোট ১২টি মন্ত্রাণালয় বা বিভাগ ছিল। নিচে মুজিবনগর সরকারের কাঠামো আলোচনা করা হলো :
১. রাষ্ট্রপতি- শেখ মুজিবুর রহমান
২. উপরাষ্ট্রপতি— সৈয়দ নজরুল ইসলাম
৩. প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ
৪. অর্থমন্ত্রী- এম. মনসুর আলী
৫. স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনবার্সন মন্ত্রী— এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামান
৬. পররাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ
৭. প্রধান সেনাপতি— কর্নেল (অব.) এম. এ. জি. ওসমানী
৮. চিফ অব স্টাফ— কর্নেল (অব.) আব্দুর রব
৯. ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এবং বিমানবাহিনীর প্রধান – গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ. কে. খন্দকার।
এছাড়া মুজিবনগর সরকারের ১২টি মন্ত্রাণালয় ছিল। এগুলো হলো :
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,
২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,
৪. মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রণালয়,
৬. আঞ্চলিক প্রশাসন,
৩. অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়,
৫. সাধারণ প্রশাসন ও সংস্থাপন বিভাগ,
৭. স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিভাগ,
৮. তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়,
৯. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,
১০. ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ,
১১. সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়,
১২. কৃষি ও প্রকৌশল বিভাগ ।
এছাড়া মুজিবনগর সরকার বৈদেশিক কূটনীতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য। সেখানে তারা অনেক সফলতা অর্জন করে। ফলে অনেক সহায়তা লাভে সক্ষম হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল শপথ নেওয়া মুজিবনগর সরকার প্রায় একটা পূর্ণাঙ্গ সরকারের কাজ নিয়ে গঠিত হয়। যদিও যুদ্ধ চলার কারণে তারা যুদ্ধজয়কেই বেশি প্রাধান্য দেয়। তাদের এ প্রাধান্যের কারণে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।