উত্তর ভূমিকা : বাংলার ইতিহাসে মীর জুমলা একজন অন্যতম সুবাদার ছিলেন। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে মীর জুমলা বাংলার সুবাদারের মর্যাদা লাভ করেন। শাসক, রাজনীতিবিদ, সেনানায়ক হিসেবে তিনি সর্বশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। বাংলায় তার শাসনামলে সুখ-শান্তি ফিরে আসে। নিম্নে তার কৃতিত্ব তুলে ধরা হলো :
মীর জুমলার কৃতিত্ব : মীর জুমলা তার অসাধারণ প্রতিভার গুণেই অতি নগন্য অবস্থা হতে শাসকের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছিলেন। যুবরাজ সুজাকে বিতাড়িত করে বাংলায় আওরঙ্গজেবের পক্ষে রাজক্ষমতা পুনরুদ্ধারে মীর জুমলা বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। তার যোগ্য সৈনাপতিত্বে ও
বুদ্ধিমত্তার ফলেই এ বিজয় সম্ভব হয়। এ বিজয় গৌরবের স্বীকৃতি স্বরূপ আওরঙ্গজেব তাকে বাংলার স্থায়ী গভর্নর নিয়োগ করেন। আহোমদের বিরুদ্ধে তার সাফল্য তেমন উল্লেখযোগ্য না হলেও কুচবিহার ও আসাম বিজয় মীর জুমলার সামরিক প্রতিভার স্বাক্ষর
বহন করে। তার সময়েই কুচবিহার সম্পূর্ণরূপে প্রথমবারের মত মুঘল সাম্রাজ্যাধীনে আসে। আসাম অভিযানের দ্বারা তিনি মুঘল
সাম্রাজ্যের সীমান্ত আসাম পর্যন্ত বর্ধিত করেছিলেন। আসাম থেকে পশ্চাদপসরণ কালে সেনানায়ক হিসেবে মীর জুমলা অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছিলেন।
উপসংহার : বাংলার ইতিহাসে সুবাদার মীর জুমলা একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। তিনি মাত্র তিন বছর বাংলায় শাসনকার্য পরিচালনা করেছেন, তাতেই উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন।।তিনি ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমান, মনের দিক থেকে অস্বাভাবিক শান্ত, নির্ভীক ও সাহসী। রাজদরবারে কূটকৌশলে এবং যুদ্ধের ময়দানে রণচাতুর্যে তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ ছিলেন।