অথবা, নার্কিন সংবিধানে বর্ণিত জনগণের সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে যা জান লিখ।
উত্তরঃ ভূমিকা: প্রত্যেক দেশের সংবিধানেরই বিশেষ কতকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রত্যেক দেশের সংবিধানের
লাম মার্কিন যুক্তনাট্রের সংবিধানেরও কতকগুলো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মার্কিন শাসনব্যবস্থার মূল চরিত্র এসব বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমেই পরীরস্থ হয়ে উঠে। মার্কিন সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল জনগণের সার্বভৌমত্বের ধারণা।
জনগণের সার্বভৌমত্বের ধারণা: জনগণের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি মার্কিন সংবিধানের উল্লেখযোগ্য বৈশিরা। মার্কিন প্রবিধান শুরু হয়েছে ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ’ এ কথাগুলোর দ্বারা। সংবিধানের প্রস্তাবনায়। এরকম উল্লেখ গার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট স্বীকৃতির পরিচায়ক। মার্কিন সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, We the people of the United States in order to form a more perfect union, establish justice insure domestic tranquility provide for the common defence….” প্রস্তাবনা থেকেই প্রতিপন্ন হয় যে, মার্কিন সংবিধানের উৎস এবং আইনগত ও নৈতিক ভিত্তি হল সে দেশের জনসাধারণ। জেমস ম্যাডিসন তার একটি Federalist পত্রিকার উল্লেখ করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাতন পদ্ধতি জনগণের দায়িত্বশীল সরকার রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর এবং এর সকল ক্ষমতা জনগণের নিকট হতে প্রত্যাশা বা পরোক্ষভাবে প্রাপ্ত হয়। জনগণই সেখানে সার্বভৌম।তবে মার্কিন সংবিধানের প্রস্তাবনায় ঘোষিত জনসাধারণের সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে সমালোচনার সুযোগ আছে। অধ্যাপক বিয়ার্ড দেখিয়েছেন যে, ১৭৮৭ সালের ফিলাডেলফিয়া সম্মেলনে শ্রমিক, কৃষক প্রভৃতি সাধারণ মানুষের কোন প্রতিনিধি ছিল না। ফলে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা সংবিধানে স্থান পায় নি। তাছাড়া সংবিধান অনুমোদনের যাবস্থার সাথে জনসাধারণকে জড়িত করার কোন চেষ্টা করা হয় নি। সুতরাং কোন ক্রমেই আপামর জনসাধারণের ক্ষমতার এফলন হতে পারে না।
উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও মার্কিন সংবিধানে বর্ণিত জনগণের সার্বভৌমত্বের ধারণাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কেননা মার্কিন সংবিধানের প্রস্তাবনাই গণসার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট স্বীকৃতির পরিচায়ক। তাই লর্ড ব্রাইস (Lord Bryce) বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে উল্লিখিত জনগণের সার্বভৌমত্বই হল গণতন্ত্রের ভিত্তি ও মূলমন্ত্রস্বরূপ।”