অথবা, তুমি কি মনে কর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শাসন ব্যবস্থায় ক্ষমতা-স্বতন্ত্রীকরণ নীতির
কার্যকারিতা পরিলক্ষিত হয়?
অথবা, ক্ষমতা-স্বতন্ত্রীকরণ নীতির যথাযথ প্রয়োগ সম্ভব হয়েছে। যুক্তি দেখাও।
উত্তরঃ ভূমিকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উদারনৈতিক গণতন্ত্র প্রচলিত রয়েছে। গণতান্ত্রিক সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধি ও ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ অপরিহার্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও Complete seperation of power is neither possible nor desirable, কারণ সরকারের বিভিন্ন অঙ্গগুলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের সাথে সম্পর্ক যুক্ত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ সীতির যথাযথ প্রয়োগ হয়েছে কি না: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রচলিত। মার্কিন সংবিধানে আইন, শাসন ও বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা পৃথক করে দেয়া হলেও প্রকৃত প্রস্তাবে শাসন বিভাগ অনেক সময় বিভাগ বহির্ভূত অনেক কাজ করে। আবার মার্কিন রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন। তিনি যে কোন বিলে ভেটো প্রয়োগ করে আইনটি বাতিল করতে পারেন। অনেক সময় congress president একই দলভুক্ত হলে president কংগ্রেসকে প্রভাবিত করে প্রয়োজনীয় আইন পাস করিয়ে নিতে পারে। রেডিও, টেলিভিশন এজ, জাতীয় প্রচার মাধ্যমগুলোতে বক্তৃতা, বিবৃতি দিয়ে জনমত সৃষ্টির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি কংগ্রেস দ্বারা আইন পাস করতে পারেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দান করলে তা কংগ্রেস কর্তৃক অনুমোদিত হতে হয়। সন্ধি, চুক্তি বা যুদ্ধ শোষণ। করতেও কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রপতি শাসন বিভাগের প্রধান হওয়া সত্ত্বেও বিচার সংক্রান্ত কাজ করে থাকেন। যেমন-তিনি বিচারকদের নিয়োগ করেন। আবার সুপ্রিম কোর্ট কংগ্রেস প্রণীত আইনকে বাতিল করতে পারেন। এছাড়া কোন বিশেষ প্রয়োজনে বিচার বিভাগ নতুন আইন তৈরি করে বিচার কাজ পরিচালনা করতে পারে। তাই একথা সুস্পষ্ট যে, মার্কিন সংবিধানে সরকারের তিনটি বিভাগের ক্ষমতার সীমারেখা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও এক বিভাগ অন্য বিভাগের অনেক কাজ করে।
উপসংহার: উপর্যুক্ত আলোচনায় একথা স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের তিনটি বিভাগ স্ব-গ অবস্থানে থেকে স্বতন্ত্রভাবে তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করতে পারছে না। তাই বলা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির যথাযথ প্রয়োগ সম্ভব হয় নি।