অথবা, মাঠকর্ম সংস্থাপনের নির্দেশিকাগুলো আলোচনা কর।
অথবা, মাঠকর্ম সংস্থাপনের নির্দেশিকাগুলো তুলে ধর।
অথবা, মাঠকর্ম সংস্থাপনের নির্দেশিকাসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা, মাঠকর্ম সংস্থাপনের সাধারণ নির্দেশিকাগুলো বর্ণনা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা : সমাজকর্মে কতিপয় নীতিমালা, মূল্যবোধ, আদর্শ ও পদ্ধতি রয়েছে।এগুলো সমাজকর্মীদের মেনে চলতে হয়। অন্যদিকে মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্যও কতিপয় নির্দেশিকা রয়েছে। এ নির্দেশিকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এজেন্সি তত্ত্বাবধায়কসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেই মেনে চলতে হয়।
মাঠকর্ম সংস্থাপনের সাধারণ নির্দেশিকা
মাঠকর্ম অনুশীলনের ক্ষেত্রে কতিপয় সাধারণ নির্দেশিকা মেনে চলতে হয়। নিম্নে কতিপয় সাধারণ নির্দেশিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. প্রতিষ্ঠান নির্বাচন : মাঠকর্ম সংস্থাপনের ক্ষেত্রে অনার্সের শিক্ষার্থীদেরকে সাধারণ বিষয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে সেসব প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করতে হয়। অন্যদিকে মাস্টার্স পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান যেগুলো অধিকতর ক্রিটিক্যাল পর্যায়ে কাজ করে সেসব প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করতে হয়।
২. শিক্ষার্থীদের চাহিদা : মাঠকর্ম সংস্থাপনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা কোন ক্ষেত্রে অধিক ইন্টারেস্ট ফিল করে সে ক্ষেত্রে তাদেরকে মাঠকর্ম অনুশীলনে প্রেরণ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে একই ধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রেরণের জন্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হলে সেক্ষেত্রে দ্বৈবচয়ন পদ্ধতিতে তাদের ফিল্ড নির্বাচন করতে হয়।
৩. নিকটতম প্রতিষ্ঠান : শিক্ষার্থীদেরকে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী প্রতিষ্ঠানে সংস্থাপন করতে হবে।
৪. সরকারি বা বেসরকারি এজেন্সি : মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্য সরকারি বা বেসরকারি এজেন্সি বেছে নেয়া হয়। তবে এসব এজেন্সি হতে হয় সমাজকল্যাণমূলক কার্যাবলির সাথে সংশ্লিষ্ট।
৫. যৌথ তত্ত্বাবধান : শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের যৌথ তত্ত্বাবধানে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। এখানে একজন এজেন্সি বা প্রাতিষ্ঠানিক তত্ত্বাবধায়ক ও একজন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক থাকেন।
৬. দল গঠন : শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্য দল গঠন করতে হয় । একটি দলে ন্যূনতম দুজন থেকে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী থাকে।
৭. ওরিয়েন্টেশন : মাঠকর্ম সংস্থাপনের জন্য ওরিয়েন্টেশন -এর গুরুত্ব অপরিহার্য।
৮. অনুপাত মেনে চলা : মাঠকর্মে প্রেরণের ক্ষেত্রে অনুপাত মেনে চলা হয় । একজন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে কতজন শিক্ষানবিস থাকবে বা একটি প্রতিষ্ঠানে কতজন শিক্ষানবিস প্রেরণ করা হবে তা আনুপাতিক হারে বণ্টন করতে হবে।
৯. একাধিকবার সংস্থাপন না করা : একটি সংস্থায় একজন শিক্ষার্থীকে একাধিকবার সংস্থাপন করা যাবে না।
১০. সহযোগিতা : শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদেরকে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক তত্ত্বাবধায়ক ও বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক তাদের প্রয়োজনে সহযোগিতা করবেন। তারা শিক্ষার্থীরা যেখানে বুঝতে পারে না তা সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিবেন
১১. তত্ত্বাবধায়কের স্বাধীনতা : একজন শিক্ষার্থী যে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে কাজ করে সেই তত্ত্বাবধায়কের কাজে স্বাধীনতা থাকবে।
১২. স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা : মাঠকর্ম সংস্থাপনের ক্ষেত্রে শিক্ষানবিস সমাজকর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হয়। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সংস্থাপন না করাই ভালো।
উপসংহার : উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের আগ্রহ- অনাগ্রহ, এজেন্সির চাহিদা ও সক্ষমতা, প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যবোধ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় রেখে মাঠকর্ম সংস্
থাপন করতে হবে।