অথবা, “আত্মবিলাপ কবিতা যন্ত্রণাপীড়িত কবির মর্মান্তিক আর্তনাদ।”- উক্তিটির যথার্থতা যুক্তিসহ বিচার কর।
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩), একজন আধুনিক বাংলা কবিতার জনক এবং বহুমুখী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি পাশ্চাত্য সাহিত্য-সংস্কৃতির আদর্শ পূজারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং মধুসূদন ধূমকেতুর মতো তিনি বাংলা সাহিত্যচর্চায় মনামনি করেছিলেন। তার ‘মেঘনাধবধ’ কাব্য কবির জনপ্রিয়তা একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কাব্য। এর পাশাপাশি, মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন একজন অসামান্য গীতিকবি এবং তার বাংলা গীতিকবিতা ক্ষেত্রেও তার অদ্ভুত কৃতিত্ব দেখায়। ‘আত্মবিলাপ’ হলো মাইকেল মধুসূদন দত্তের একটি অমূল্য গীতি কবিতা, যেখানে কবি মানুষের জীবনের ভুলভ্রান্তির মর্মবেদনার শব্দগুলি নিজের মর্মবেদনার আবেগে রূপান্তর করেছেন।
কবির মর্মবেদনার স্বরূপ:
আশার ছলনা: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটিতে কবির মর্মবেদনার বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। এর মধ্যে একটি হলো আশার ছলনা। কবি জীবনে অনেক আশা পোষণ করেছিলেন, কিন্তু বারবার ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছেন।
জীবনের অর্থহীনতা: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটিতে কবির মর্মবেদনার বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। এর মধ্যে একটি হলো জীবনের অর্থহীনতা। কবি মনে করেন জীবন বৃথা ও অর্থহীন। জীবনে কোন সুখ নেই, শুধুই বেদনা ও দুঃখ।
সমাজের অবিচার: কবি সমাজের অবিচার ও নিষ্ঠুরতার সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন সমাজে সৎ ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিদের কোন স্থান নেই।
প্রেমের ব্যর্থতা: কবির প্রেমজীবনও ছিল দুঃখের। তিনি যে নারীকে ভালোবেসেছিলেন, তিনি অন্যের বরণ করেন। ফলে কবি প্রেমে ব্যর্থ হন।
অপমান ও লাঞ্ছনা: কবি জীবনে অনেক অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন। তিনি সমাজের ঊর্ধ্বতন শ্রেণীর তুচ্ছতা ও অহংকারের সমালোচনা করেছেন।
মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা: মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটিতে কবির মর্মবেদনার বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। এর মধ্যে একটি হলো মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা। কবি জীবনের বেদনা ও হতাশার কারণে মৃত্যুকে কামনা করেন।
আত্ম-অভিশাপ: কবি নিজের ভাগ্যকে অভিশাপ দেন। তিনি মনে করেন তার ভাগ্যে সুখ নেই, শুধুই দুঃখ।
‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনের বেদনা ও হতাশার অভিব্যক্তি। কবিতাটিতে কবির মর্মবেদনার বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। ‘আত্মবিলাপ’ কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ।