মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের বৈশিষ্ট্য কী কী ?

রকেট সাজেশন
রকেট সাজেশন


অথবা, সংসদীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ভূমিকা : গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারকে বিভিন্ন মানদণ্ডে বিচার করা হয়। এর মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ও রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার দুটি জনপ্রিয় প্রত্যয়। এ দু’শ্রেণীর মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত রয়েছে। এ শাসনব্যবস্থায় সকল ক্ষমতা তত্ত্বগতভাবে রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত থাকে। কিন্তু প্রকৃত শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে প্রধানমন্ত্রীর হাতে।

মন্ত্রিপরিষদ সরকারের বৈশিষ্ট্য : মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। নিম্নে মন্ত্রিপরিষদ। সরকারের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো

১. প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব : আইনসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাই হন প্রধানমন্ত্রী। তার নেতৃত্বেই মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। তিনি মন্ত্রিসভার বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব বণ্টন করেন। তাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদ সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় বিশেষভাবে বৈশিষ্ট্যযুক্ত।

২. নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপ্রধান মন্ত্রিপরিষদ সরকারে রাষ্ট্রপতিকে শাসক প্রধান বলা হলেও আসলে তিনি নামে মাত্র। শাসক প্রধান। প্রকৃত শাসনক্ষমতা মন্ত্রিসভার হাতে নাস্ত থাকে। নিয়মানুসারে রাষ্ট্রপতির নামেই শাসনকার্য পরিচালিত হয় । তবে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার নির্দেশে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।

৩. আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক : মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা একই সাথে আইনসভার সদস্য এবং নির্বাহী বিভাগের সদস্য। দেশের সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের আইনসভার সদস্য হওয়া বাধ্যতামূলক থাকে। এভাবেই আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক থাকে।

৪. দলীয় শাসনব্যবস্থা : মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার মূলত দলীয় সরকার। আইনসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের যিনি প্রধান তিনি প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন এবং দলীয় সদস্যদের মধ্য হতে অন্য মন্ত্রীদের নিয়োগ দেন।

৫. দায়িত্বশীলতা : শাসন বিভাগ তার কাজের জন্য আইনসভার কাছে দায়ী থাকে। আইন যে কোন সময় অ প্রস্তাবের মাধ্যমে শাসনবিভাগের মন্ত্রিসভাকে আনায়ন করতে পারে। এ কারণে মন্ত্রিসভা তার সকল কাজের জন্য ডাইনসভার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে।

৬. মন্ত্রিসভা গঠন : মন্ত্রিপরিষদ শাসিত শাসনব্যবস্থায় সমস্বার্থ সমচেতনা ও পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে মন্ত্রিসভা গঠিত। নির্বাচনে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সে দলই মন্ত্রিসভা গঠন করে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যখন কোন শাসনব্যবস্থায় আমরা উপর্যুক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখব তখন তাকে সংসদীয় সরকার বলব। দেশের শাসনকার্য পরিচালনায় এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সর্বদা এ সরকারকে গতিশীল রাখতে হবে।