অথবা, মনোসামাজিক অনুধ্যান কী?
অথবা, মনোসামাজিক স্টাডি কী?
অথবা, Psycho-social study বলতে কী বুঝ?
উত্তর৷ ভূমিকা : মনোসামাজিক অনুধ্যান (Psycho-social study) ব্যক্তি সমাজকর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর। মনোসামাজিক অনুধ্যান তথা সাহায্যার্থী ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্যসংগ্রহের উপর তার সমস্যার সমাধান ব্যবস্থা বহুলাংশে নির্ভর করে। মনোসামাজিক তথ্যসংগ্রহের জন্য ব্যক্তিকে সাধারণত কতকগুলো বিশেষ প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা হয়। এ পর্যায়ের কার্যকারিতার উপর ব্যক্তি সমাজকর্ম প্রক্রিয়ার সার্বিক সাফল্য নির্ভর করে। সেবাগ্রহীতার সমস্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট
তথ্য এবং সমস্যা সমাধানে সেবাগ্রহীতা ও এজেন্সির সম্পদ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রহ এ স্তরে সম্পন্ন করতে হয়।
মনোসামাজিক অনুধ্যান : সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পৌঁছার পূর্বে সমাজকর্মীকে ব্যক্তি, তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা, তার আর্থসামাজিক ও মনোদৈহিক তথ্যসংগ্রহ করতে হয়। সমাজকর্মীকে যে সুশৃঙ্খল পদ্ধতি
অনুসরণ করে এ তথ্যসংগ্রহ করতে হয় তাকে মনোসামাজিক অনুধ্যান বলে। মনোসামাজিক অনুধ্যানের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সমস্যার কারণ আগে Find out করতে হয়। সাধারণত যেসব কারণে ব্যক্তির মধ্যে মনোসামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হয় সেগুলো নিম্নরূপ :
১. চরম আর্থিক বিপর্যয়,
২. চরম সামাজিক বিপর্যয়,
৩.অভিযোজনগত অসুবিধা,
৪. ব্যক্তিত্বের ভারসাম্যহীনতা,
৫.পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব,
৬. হতাশা এবং
৭. তীব্র ক্ষোভ ও মানসিক আঘাত ইত্যাদি
ড. আবদুল হাকিম সরকার (২০০০ : ১১৬-১১৭) এর মতে, “ব্যক্তির মনোসামাজিক অবস্থা সঠিকভাবে উপলব্ধি করার জন্য ব্যক্তিকে নিম্নোক্ত বিশেষ প্রেক্ষাপট অনুধ্যান করতে হবে। যথা :
১. সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষণ ক্ষমতা এবং উপলব্ধি করার মতো জ্ঞান,
২. ভালোমন্দের প্রতি তার বিচারবোধ,
৩. আত্মোপলব্ধি,
৪. আবেগ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা,
৫. সংবেদনশীলতা,
৬. জ্ঞানের প্রয়োগ ক্ষমতা,
৭. বিষয় চিহ্নিতকরণ বা শনাক্তকরণ ক্ষমতা,
৮. ব্যক্তির মধ্যে উদ্বিগ্নতা ও অসহিষ্ণুতা এবং
৯. অপরাধ অনুভূতি ইত্যাদি।
উপসংহার : উপর্যুক্ত বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে ব্যক্তি ও তার সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যসংগ্রহ করতে হয়। আর এ ধরনের তথ্যসংগ্রহের জন্য সমাজকর্মীকে ব্যক্তির সাথে যথাযথ সম্পর্ক র্যাপো স্থাপন করতে হয়। কারণ পেশাগত সম্পর্ক স্থাপন ছাড়া ব্যক্তি কখনো সমাজকর্মীর কাছে তার গোপন তথ্য ফাঁস করবে না। বস্তুতপক্ষে পেশাগত সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমেই ব্যক্তি সম্পর্কে ও তার সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য বের
করা সম্ভব।