উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বিরচিত ‘নয়নচারা’ শীর্ষক ছোটগল্প থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : হৃদয়হীন শহরের মানুষদের মধ্যে একটি মেয়ের সহৃদয় ব্যবহারে বিস্মিত আমুর মনে যে প্রশ্ন জেগেছিল তা-ই জি এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : দুর্ভিক্ষের করালগ্রাসে আমু ময়ূরাক্ষী নদীতীরবর্তী নয়নচারা গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছে। এখানে আমু খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ফুটপাতে আশ্রয় নিয়েছে। সারাদিন সে শহরের মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত পেতে বেড়ায় একমুঠে৷ খাদ্যের জন্য। কিন্তু এখানকার মানুষগুলো বড্ড হৃদয়হীন। এদের মধ্যে দয়ামায়া, মমতা, স্নেহ, ভালোবাসা বলতে কিছু নেই। আমু এদের – চোখে দেখতে পায় পাশবিক হিংস্রতা। এরা তাকে খাবারের বদলে লাথি-ঝাঁটা দিয়ে বিদায় করে। আমু এদের ব্যবহারে কষ্ট পায়। শহরের এক হোটেল মালিকের কাছে মার খেয়ে আমু হাঁটতে হাঁটতে মনের অজান্তে একটা বাড়ির দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। সহসা দরজা খুলে এক মমতাময়ী নারী আমুকে কিছু খাবার দেয়। মেয়েটাকে তার খুব চেনা চেনা মনে হয়। এমন মধুর নম্র ব্যবহার সে আর কারও কাছ থেকে পায়নি। এ মেয়েটা ঠিক তাদের নয়নচারা গ্রামের মেয়েদের মতো। এর মধ্যে দয়া আছে, মায়া আছে, মমতা আছে । আমুর মনে প্রশ্ন জাগে মেয়েটার বাপের বাড়ি নয়নচারা গ্রামে নয়তো?
মন্তব্য : শহরের হৃদয়হীন মানুষদের নিষ্ঠুর ব্যবহারে অভ্যস্ত আমু মেয়েটির মধ্যে কোমলতার ছোঁয়া পেয়ে বিস্মিত ও অভিভূত
হয়ে পড়েছিল।