উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু বাংলা ছোটগল্পের জনক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহুল পঠিত অনবদ্য ছোটগল্প ‘একরাত্রি’ ধেয়ে
প্রসঙ্গ : সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে মানুষের জীবনে যে নানা দুর্ভোগ নেমে আসে সে প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি অবতারণা করা হয়েছে।
বিশ্লেষণ : রামলোচন রায়ের বাড়ি থেকে ফিরে আসার পর থেকে নায়কের মনোরাজ্যে ঝড় বয়ে যেতে থাকে। কোন কাজে মনোসংযোগ করা তার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। যে সুরবালা ছিল তার সবচেয়ে কাছের মানুষ আজ সে সবচেয়ে দূরবর্তিনী। আজ তাকে দেখা নিষেধ, তার সাথে কথা কওয়া দোষ, তার বিষয়ে চিন্তা করা পাপ। অথচ সে তার জীবনের সমস্ত সুখ-দুঃখভাগিনী হতে পারতো। তারই অবহেলায় সে আজ অন্যের ঘরের ঘরণী। মুখস্থ মন্ত্র পড়ে কে একজন রামলোচন সুরবালাকে অধিকার করেছে। অথচ সুরবালা তার সমস্ত হৃদয় জুড়ে অবস্থান করলেও সে আজ তার কেউ নয়। সুরবালার উপরে তার চেয়ে বেশি কারও অধিকার আছে এ কথা তার ভাবতে কষ্ট হয়। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সুরবালার উপর তার কোন অধিকার কল্পনা অন্যায় অসংগত জেনেও তার মন তাকে অস্বাভাবিক বলে মেনে নেয় না। নিজের আত্মতুষ্টির জন্য সে দার্শনিক তত্ত্বের অবতারণা করে- মনুষ্যসমাজ একটি জটিল ভ্রমের জাল। সঠিক সময়ে সঠিক কাজের কথা কারও মনে থাকে না। অবশেষে বেঠিক সময়ে বেঠিক বাসনা নিয়ে সবাই অস্থির হয়ে মরে।
মন্তব্য : সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবেই নায়কের জীবনে নেমে এসেছে এ করুণ ট্র্যাজেডি। মানুষের এখান থেকে অনেক শেখার আছে।