উৎস : আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহুল পঠিত অনবদ্য ছোটগল্প ‘একরাত্রি’ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : সুরবালাকে আবার নতুন করে নিজের ভিতরে অনুভব করায় নায়কের হৃদয়বেদনা আলোচ্য অংশে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে।
বিশ্লেষণ : পিতার মৃত্যুতে নায়কের জীবনে ছন্দপতন ঘটে। সংসারের সমস্ত দায়দায়িত্ব এখন তার কাঁধে। জীবনবাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সে এখন নোয়াখালী অঞ্চলের একটি স্কুলের সেকেন্ড মাস্টার। তার বাল্যসখী সুরবালাও বিবাহসূত্রে এখন নোয়াখালীতে অবস্থান করে। নায়কের সাথে সুরবালার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে তার বিয়ে হয় নোয়াখালীর সরকারি উকিল রামলোচন রায় সাথে। নায়ক এ খবর আগেই জানত। একদিন গল্প করার উদ্দেশ্যে নায়ক উপস্থিত হয় রামলোচন রায়ের বাড়িতে। সেখানেই পাশের কক্ষে শাড়ির খসখস চুড়ির টুং টাং শব্দে সুরবালার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। তার মনে পড়ে যায় শৈশব প্রীতিতে ঢলঢল দুখানি বড়ো বড়ো চোখ, কালো কালো তারা, ঘনকৃষ্ণ পল্লব, স্থিরস্নিগ্ধ দৃষ্টি। কিন্তু নায়ক নিরুপায়। সুরবালাকে চোখে দেখার অধিকারটুকুও আজ তার নেই। সে বাসায় ফিরে আসে। সুরবালা আজ তার সমস্ত হৃদয় জুড়ে অবস্থান করছে। কিছুতেই সে সুরবালার সাথের শৈশব স্মৃতি মন থেকে সরাতে পারছে না। নিজের মন আজ তার নিজের কাছেই অচেনা। কোন এক ব্যথার ভারে আজ সে নায়কের হৃদয়কে চেপে ধরেছে।
মন্তব্য : শৈশবের অবহেলিত সুরবালা আজ নায়কের সমস্ত হৃদয় জুড়ে অবস্থান করছে।