উত্তর : ভূমিকা : সুবাদার শায়েস্তা খান বাংলার ইতিহাসে এক বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছেন। বাংলার ইতিহাসে মগরা দুধর্ষ জাতি হিসেবে পরিচিত। মগরা বাংলা আগমন করে ধনসম্পদ লুট ও নর নারীদের ধরে নিয়ে ক্রীতদাসরূপে বিক্রি করত। শায়েস্তা খান মগ জলদস্যুদের দমন করেন।
→ মগ জলদস্যুদের পরিচয় : বাংলাদেশের একটি উপজাতি মগ। বার্মার আরাকান জাতির মানুষ যারা ১৫০০-১৭০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ জলদস্যু বা আরাকান রাজ্যবিস্তারের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং তার চারপাশে আক্রমণ ও স্থানীয় লোকদের ধরে নিয়ে ক্রীতদাসরূপে বিক্রি করত। ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে পর্তুগিজ ও মগ জলদস্যুরা যৌথভাবে বাংলাদেশে যে অবস্থা সৃষ্টি করেছিল তা বর্ণনাতীত। তাদের অত্যাচারে চট্টগ্রাম থেকে বর্তমানে সাতক্ষীরা পর্যন্ত গোষাই উপকূল সম্পূর্ণ জলদস্যু পরিবেষ্টিত হয়ে পড়েছিল। মগরা গ্রামের পর গ্রাম লুট করত ও নর-নারীদের ধরে নিয়ে গিয়ে দাস-দাসী বানাত। নারীরাই তাদের শিকার হত বেশি। মগরা যুবক-যুবতীদের হাতের তালু ও পায়ের পাতা ফুটো করে বেত দিয়ে বেধে নৌকার পাঠাতনে নিয়ে গাদাগাদি করে ফেলে
রাখত হাঁস-মুরগির মতো। পর্যটক সোবাস্তিয়ান মানরিকের বর্ণনা হতে জানা যায় ১৬২৯ থেকে ১৬৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ১৮ হাজার মানুষ ধরে নিয়ে গিয়ে দিরাঙ্গা ও আরাকানে বিক্রি করত। মোঘল আমলে
মগরা তিনবার ঢাকা লুন্ঠন করে। বাংলার সুবাদার শায়েস্তা খান মগদের দমন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলায় মগ জলদস্যুদের উৎপাত শায়েস্তা খানের শাসনকার্যে বিরূপ প্রভাব করে। মগ জলদস্যুদের উপদ্রব থেকে জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য সুবোদার শায়েস্তা খান চট্টগ্রামে অভিযান পরিচালনা করে মগও সিরিঙ্গি জলদস্যুদের দমন করেন।