Download Our App

ভ্রম সম্পর্কে শঙ্করের মত সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।

অথবা, ভ্রম সম্পর্কে শঙ্করাচার্যের মত সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, শঙ্করের মতে ভ্ৰম কী?
অথবা, ভ্রম সম্পর্কে শঙ্করের কী বলেন?
অথবা, শঙ্কর অনুসরণে ভ্রমের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর৷ ভূমিকা :
মহর্ষি বারায়ন বেদান্ত দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা। বাদরায়ন বেদান্ত দর্শনের যে সূত্রগুলো ব্যাখ্যা করেছেন তা খুবই সংক্ষিপ্ত বলে বিভিন্ন ভাষ্যকর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এ সকল ব্যাখ্যার মধ্যে শঙ্করাচার্য ও রামানুজ প্রদত্ত ব্যাখ্যা প্রাধান্য লাভ করেছে। অন্যান্য মতবাদের ন্যায় জ্ঞানতত্ত্বেও শঙ্করাচার্য ও রামানুজ নিজস্ব স্বকীয়তা দিয়ে আলোচনা করেছেন। শঙ্কর তাঁর জ্ঞানতত্ত্বে জ্ঞানের চারটি উৎসের কথা বলেছেন। যথা: (ক) প্রমাণ; (খ) পরাবিদ্যা ও অপরাবিদ্যা; (গ) সত্যতা ও (ঘ) ভ্রম।
ভ্ৰম : অদ্বৈত বেদান্ত মতে, ভ্রম জ্ঞানের বিষয়কে সৎও বলা যায় না, আবার অসৎও বলা যায় না। আবার সদাসত্ত বলা যায় না। যেমন- রজ্জুতে যখন সর্প ভ্রম হয়, তখন সৰ্পকে অসৎ বলা যায় না। কারণ সর্প যদি অসৎ হয় তবে প্রত্যক্ষ হয় কেমন করে? আবার সর্ম্পকে সৎও বলা যায় না। যেহেতু পরে রজ্জু জ্ঞানের দ্বারা সর্প জ্ঞান বাধিত হয়। আবার সর্ম্পকে সদাসও বলা যায় না। কারণ সৎ এবং অসৎ পরস্পরবিরোধী। তাই সৎ ও অসৎ কারো বেলায় একই সময়ে একই অর্থে

সত্য হতে পারে না। কাজেই অদ্বৈত বেদান্ত মতে সৰ্প অনির্বচনীয়। এ সত্তা প্রাতিভাসিক এবং যতক্ষণ পর্যন্ত রজ্জু জ্ঞান না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এ সর্প ভ্রান্তদর্শীর নিকট প্রতিভাত হয়। রজ্জু জ্ঞান দ্বারা ভ্রম দূরীভূত হওয়া মাত্রই সর্পের কোন অস্তিত্ব থাকে না। ভ্রম সম্পর্কে অদ্বৈতবাদীদের এ মতবাদ অনির্বাচনীয় খ্যাতিবাদ নামে পরিচিত। অদ্বৈত বেদান্ত মতে, ভ্রমের কারণ হলো অবিদ্যা, অবিদ্যার জন্যই রজ্জুতে সর্প ভ্রম হয়। ব্রহ্মে জগৎ ভ্রমও এ অবিদ্যার জন্য ঘটে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শঙ্কর বেদান্ত দর্শনের ভাষ্যকার হিসেবে যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা অনেকাংশে গ্রহণযোগ্য। তাইতো শঙ্করাচার্যের জ্ঞানতত্ত্ব দর্শনের আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।