ব্রিস্টলের সংবিধানের অস্তিত্ব নেই”- এ মতের পক্ষে যুক্তি আলোচনা কর।

রকেট সাজেশন
রকেট সাজেশন

অথবা, ব্রিটেনের সংবিধানের অস্তিত্ব নেই। তুমি কি এ মতের সাথে একমত? ব্যাখ্যা কর।
অথবা, ব্রিটেনের সংবিধানের কি? অস্তিত্ব আছে? বুঝিয়ে লিখ।

উত্তরঃ ভূমিকা: পৃথিবীর অন্যান্য দেশের শাসনতন্ত্রের উৎপত্তির ইতিবৃত্ত এবং ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থার উৎপত্তির ইতিহাস এক নয়। ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থা কোন সুপরিকল্পিত পরিকল্পনার ফল নয়, আবার এ শাসনব্যবস্থা দেশবাসীর উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হয় নি, বরং দেশ ও দেশের জনগণের সামগ্রিক অবস্থার সাথে দেশের শাসনব্যবস্থার এক স্বাভাবিক ও ওতপ্রোত সম্পর্ক বিরাজমান। তবে এ শাসনব্যবস্থায় অন্যতম প্রধান দলিল সংবিধান, যা অলিখিত। এ কারণে অনেকেই এ সংবিধানের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আবার কেউ কেউ ব্রিটিশ সংবিধানের প্রশংসা করেছেন। ব্রিটিশ সংবিধানের অস্তিত্ব সম্পর্কে যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে, সে সম্পর্কে যেসব রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, দার্শনিকগণ নিজস্ব মতামত দিয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- টকতিল, বার্ক, পেইন, জেনিংস প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

ব্রিটেনের সংবিধানের অক্তিত্ব নেই” এ গতের পক্ষে যুক্তি: যেসব রাষ্ট্রচিন্তাবিদ সংবিধানের সংকীর্ণ অর্থ গ্রহণ
করেছিলেন, তারাই ব্রিটেনের সংবিধানের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছেন। এদের মধ্যে টকভিল ও পেইন এর নাম
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ফরাসি লেখক টকডিল মনে করেন মূলত ব্রিটেনে সংবিধান বলে কোনকিছুর অস্তিত্ব নেই। তিনি বলেছেন, “In England the constitution……..does not crist.” ফরাসি বিপ্লবের সমালোচনা করতে গিয়ে এডমন্ড বার্ক যখন ব্রিটিশ সংবিধানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন পেইন বার্ককে পাল্টা প্রশ্ন করেন যে, “Can Mr. Burke produce the British constitution? If he cannot, we may fairly conclude that through it has been so much talked about, no such thing as a constitution exists or ever did exist.” তবে এসব পণ্ডিতগণ সংবিধানের সংকীর্ণ অর্থকে প্রাধান্য দিয়ে ব্রিটিশ সংবিধানকে বিশ্লেষণ করেছিলেন। তারা তাদের মতামতের পক্ষে যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন তা নিম্নে উল্লেখ করা হল।

i. যেসব মৌলিক নীতির দ্বারা ব্রিটেনের শাসনব্যবস্থা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়, সেগুলো কোন একটি দলিলে লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ নেই।

ii. ব্রিটেনের সংবিধান ঐতিহাসিক বিবর্তনের ধারায় গড়ে উঠেছে, এর নীতিসমূহ কোন বিশেষ সময়ে কোন নির্দিষ্ট গণপরিষদের দ্বারা সুপরিকল্পিতভাবে বিধিবদ্ধ হয় নি।

iii. ব্রিটেনের সংবিধানের বিভিন্ন নিয়মকানুন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন লিখিত দলিলে ও বিধিবদ্ধ আইনে এবং বহু অলিখিত প্রথা ও রীতিনীতির মধ্যে।

iv. ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এসব সাংবিধানিক নিয়মকানুনসমূহ সাধারণ আইনের মত যে কোন সময় পরিবর্তন করতে পারে।

উপসংহার: সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, সংবিধানের প্রকৃতিগত অর্থের দিক বিচার বিশ্লেষণ করেই উক্ত পণ্ডিতগণ ব্রিটেনের সংবিধানের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছেন। তারা সংবিধানের প্রয়োগগত দিকের প্রাধান্যকে গুরুত্ব দেন নি। তবে তাঁদের যুক্তি যে একেবারে অবাস্তব তা বলা যায় না।