অথবা, “সামষ্টিক অর্থনীতি ও ব্যষ্টিক অর্থনীতি পরস্পর পরিপুরক” উক্তিটি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর ও ভূমিকা: অর্থনীতির যে অংশটি পদার্থের ক্ষুদ্র একক বিশ্লেষণ করে তাকে মাইক্রোইকোনমিক্স বলে। যেমন- ভোক্তার চাহিদা, পণ্যের মূল্য ইত্যাদি। অর্থনীতির যে অংশ সমষ্টিগত বা জাতীয় পর্যায়ে বিশ্লেষণ করা হয় তাকে সামষ্টিক অর্থনীতি বলে। আধুনিক অর্থনীতির বিশ্লেষণে ম্যাক্রো এবং ম্যাক্রো উভয় অর্থনীতিই গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুদ্র ও সামষ্টিক অর্থনীতির পারস্পরিক গুরুত্ব নিচে আলোচনা করা হলো:
১.সামষ্টিক অর্থনীতি একটি ব্যক্তি বা একটি সংস্থার কার্যাবলী নিয়ে কাজ করে। অন্যদিকে, সামষ্টিক অর্থনীতি দেশের সামগ্রিক আর্থিক ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করে। সুতরাং অর্থনীতির সম্পূর্ণ বিশ্লেষণের জন্য পৃথক এবং ম্যাক্রো উভয় প্রকার বিশ্লেষণ প্রয়োজন.
২. অর্থনীতির বিশদ বিশ্লেষণ ছাড়া একটি সমস্যা অনুপ্রবেশ করা যাবে না। অন্যদিকে, সামগ্রিক বিশ্লেষণ ছাড়া সমস্যাটি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা যায় না। যেমন, দেশের মোট জাতীয় উৎপাদন নিয়ে আলোচনা করা ফার্মের উৎপাদন পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
৩. আর্থিক ব্যবস্থার নির্দিষ্ট অংশগুলির আলোচনার ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য তা সামগ্রিক বিশ্লেষণে প্রযোজ্য নাও হতে পারে৷উদাহরণস্বরূপ, অর্থনৈতিক সংকটের সময় ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে বঞ্চিত হলেও তা সামগ্রিকভাবে দেশের সংকটকে বাড়িয়ে দিতে পারে। অতএব, অর্থনীতির একটি সম্পূর্ণ চিত্র পেতে, পৃথক এবং ম্যাক্রো উভয় বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
৪. সামষ্টিক অর্থনীতি হল সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন ইউনিটের সমষ্টি। আবার, ব্যক্তি সমষ্টিগত আলোচনার অংশ। সুতরাং স্বতন্ত্র অর্থনীতি এবং ম্যাক্রো অর্থনীতি একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা নয় বরং একে অপরের পরিপূরক।
উপসংহার: পরিশেষে, দেশের অর্থের সঠিক ও সম্পূর্ণ বিশ্লেষণের জন্য, একা সামষ্টিক-অর্থনৈতিক আলোচনাই যথেষ্ট নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিচার-বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের জন্য সমন্বয় প্রয়োজন। অর্থনীতিবিদ পল। এ. স্যামুয়েলসন ঠিকই বলেছেন, “ব্যক্তি ও সামষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে কোনো মৌলিক দ্বন্দ্ব নেই। উভয়ই একেবারে অপরিহার্য।”