ব্যষ্টিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তা/ গুরুত্ব/তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
অথবা, ব্যষ্টিক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর।
অথবা, ব্যষ্টিক অর্থনীতির তাৎপর্য তুলে ধর।
উত্তর : আধুনিক প্রগতিশীল অর্থ ব্যবস্থায় ব্যষ্টিক অর্থনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কল্যাণমূলক অর্থনীতি ও উন্নয়ন অর্থনীতির নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যষ্টিক অর্থনীতি অত্যন্ত সহায়ক। নিম্নে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলঃ
১. অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিশ্লেষণ ঃ ব্যষ্টিক অর্থনীতি ব্যক্তিতন্ত্রবাদী তথা অবাধ অর্থনীতির কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেয়। কোন অর্থনৈতিক পরিবেশে কি উৎপাদন করা হবে, কিভাবে উৎপাদন করা হবে, কার জন্য উৎপাদন করা হবে ইত্যাদি বিষয় ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে আলোচনা করা হয়। এসব বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান ব্যষ্টিক অর্থনীতিতেই পাওয়া যায় ।
২. অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়ন ৪ দেশের দাম নীতি সমগ্র অর্থনীতির উপর প্রভাব বিস্তার করে। সরকার কি ধরনের দাম
নীতির প্রণয়ন করলে বাজার ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে, এ সম্পর্কে ধারনা দেয় ব্যষ্টিক অর্থনীতি।
৩. সম্পদের কাম্য ব্যবহার ঃ কোন একটি দেশের বিদ্যমান সম্পদ সমূহের কাম্য ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, সে সম্পর্কে দিক নির্দেশনা ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে পাওয়া যায়।
৪. সম্পদের বণ্টন ঃ কোন দেশের প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদকে কাম্য উৎপাদনের মাধ্যমে কিভাবে ব্যবহার ও বণ্টন করা যায়, তা ব্যষ্টিক অর্থনীতির আলোচ্য বিষয়। সম্পদের সর্বোচ্চ উৎপাদন এবং ভোক্তার কাম্য উপযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে ব্যষ্টিক অর্থনীতি।
৫. কর আরোপ : কর আরোপের মাধ্যমে কর সংগ্রহ, কর বণ্টন নীতি, সমাজের কল্যাণ সাধন করা, সমাজের করভার ন্যায় ভিত্তিক কিনা, কর আরোপের দ্বারা বাজার, উৎপাদন, ভোগের উপর প্রভাব,ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক লাভ- লোকসান ইত্যাদির সমস্যা ও সমাধান নিয়ে ব্যষ্টিক অর্থনীতি কাজ করে।
৬. সমন্বয় সাধন : উৎপাদনের বিভিন্ন উপাদান এবং বাজারের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা ব্যষ্টিক অর্থনীতির কাজ।
৭. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য : আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে লাভ পরিমাপ এবং বাণিজ্য হার নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাদের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদান কাজ করে। লেনদেন ভারসাম্য, বৈদেশিক বিনিময় হার নির্ধারণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ও ব্যষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদান ভূমিকা পালন করে।
৮. কল্যাণমূলক অর্থনীতি ব্যাখ্যা : ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে সামাজিক কল্যাণ বিচার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সমাজের কল্যাণ কোন অবস্থায় সর্বাধিক হবে, কিভাবে সম্পদের কাম্য ব্যবহার সম্ভব, কিভাবে সমাজের সকল ভোক্তা কাম্যাবস্থায় পৌঁছায়, কিভাবে মূল্যবোধের উপর সামাজিক কল্যাণ নির্ভরশীল ইত্যাদি সম্পর্কেও ব্যষ্টিক অর্থনীতি ধারণা প্রদান করে। যে কোন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার গভীরতা নিরূপণ এবং এর সাথে বিভিন্ন সমস্যার প্রকৃতি ও এর সমাধান প্রক্রিয়া সম্পর্কে যথাযথ আলোচনা ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে করা হয়। অতএব ব্যষ্টিক অর্থনীতির গুরুত্ব অসীম।