উৎস : ব্যাখ্যেয় গদ্যাংশটুকু সুসাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরী বিরচিত ‘যৌবনে দাও রাজটিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে মানুষের দৈহিক যৌবন এবং সমাজের যৌবন যে এক নয় তা স্পষ্ট করতে গিয়ে প্রাবন্ধিক এ মন্তব্য করেছেন।
বিশ্লেষণ : মানুষের দেহে যৌবন অনিত্য অর্থাৎ ক্ষণস্থায়ী। কৈশোর পেরিয়ে মানুষ যৌবনে প্রবেশ করে। তারপর একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে তার দেহে যৌবন অবস্থান করে। আমরা এই সময়টাকে জীবনের সর্বোত্তম সময় হিসেবে আখ্যায়িত করি। এ সময়ে মানুষের দেহে থাকে লাবণ্য, থাকে শক্তি আর উদ্যম। এই শক্তি ও উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে মানুষ নতুন নতুন সৃষ্টিতে উদ্যোগী হয়। কিন্তু এই যৌবনের স্থায়িত্ব খুব কম। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বার্ধক্যে প্রবেশ করলেই দৈহিক যৌবন ফুরিয়ে যায়। ব্যক্তিগত জীবনে ফাল্গুন-রূপ যৌবন একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না। যৌবন তাই মানুষের কাছে পরম কাঙ্ক্ষিত বস্তু। এ কারণেই যযাতি আপন পুত্রের কাছে যৌবন ভিক্ষা চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে যৌবন ফুরিয়ে গেলেও সমাজের যৌবন চিরস্থায়ী। সমাজদেহে যে যৌবন বিরাজ করে তা কোন দিন ফুরায় না।
মন্তব্য : মানুষের দেহের যৌবন ক্ষণস্থায়ী। এটা একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না। সমাজের যৌবন চিরস্থায়ী এর কোন মৃত্যু নেই ।