বৈশেষিক মতে প্রাগভাব কী?

অথবা, বৈশেষিক মতে প্রাগভাব বলতে কী বুঝ?
অথবা, প্রাগাভাব কাকে বলে?
অথবা, বৈশেষিকরা প্রাগাভাব বলতে কী বোঝান?
উত্তর৷৷ ভূমিকা :
বৈশেষিক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহর্ষি কণাদ। বৈশেষিক সাত প্রকারের পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যথা : ক. ভাবপদার্থ এবং খ. অভাবপদার্থ। সকল অস্তিত্বশীল বস্তু ভাবপদার্থ। যেমন— দ্রব্য, গুণ ইত্যাদি । বৈশেষিক স্বীকৃত সাতটি পদার্থের দ্রব্য, গুণ, কর্ম, সামান্য, বিশেষ এবং সমবায় এ ছয়টি ভাবপদার্থ। অভাব হলো কোন
কিছুর অস্তিত্বহীনতা। যেমন- রাতের আকাশে সূর্যের অভাব বললে আমরা বুঝি যে, রাতের আকাশে সূর্যের অস্তিত্ব নেই। অভাব একটি নঞর্থক পদার্থ (Negative category); এটি ভাব পদার্থের বিপরীত। অভাব দুই প্রকারের। যথা : সংসর্গাভাব এবং অন্যোন্যাভাব। কোন বস্তুতে অন্য কোন বস্তুর অভাবকে বলা হয় সংসর্গাভাব, আর অন্যোন্যাভাব বলতে বুঝায় যে, একটি বস্তু আর একটি বস্তু নয়। সংসর্গাভাব আবার তিন প্রকারের। যথা : প্রাগভাব, ধ্বংসাভাব এবং অত্যন্তাভাব।
প্রাগভাব : কোন বস্তু উৎপন্ন হওয়ার আগে সেই বস্তুর উপাদানের মধ্যে বস্তুটির যে অভাব তাকেই বলা হয় প্রাগভাব । যেমন— ইট, বালি, সিমেন্ট, লৌহ ও কাঠের মধ্যে দালানের অভাব। এখানে দালানের উপাদানগুলোর সঙ্গে দালানের সংসর্গাভাব আছে। প্রাগভাবের কোন আদি নেই। যেহেতু দালানটি নির্মিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন সময়ে উক্ত দালানের
উপাদানের মধ্যে দালানটির অস্তিত্ব ছিল না। কিন্তু প্রাগভাবের অন্ত আছে। যেহেতু দলানটি নির্মিত হওয়ার সাথে সাথে প্রাগভাবের বিনাশ হলো। কাজেই প্রাগভাব অনাদি হলেও অনন্ত নয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বৈশেষিকদের পদার্থ সম্পর্কীয় মতবাদে ধ্বংসাভাব সম্পর্কে যে আলোচনা করা হয়েছে তা দর্শনের আলোচনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।