বৈশেষিক মতে ঈশ্বর বলতে কী বুঝায়?

অথবা, ঈশ্বর সম্পর্কে বৈশেষিক মত সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা, বৈশেষিক ঈশ্বরতত্ত্ব সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
অথবা, বৈশেষিক মতে ঈশ্বর কী?
অথবা, বৈশেষিক মতে ঈশ্বর কাকে বলে?
উত্তর৷ ভূমিকা :
বৈশেষিক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহর্ষি কণাদ। মহর্ষি কণাদের প্রকৃত নাম উলুক। কণাদ ও উলুক—এই দুই নাম অনুসারে তাঁর প্রণীত দর্শন ‘কণাদ দর্শন’ বা ‘ঔলুক্য দর্শন’ নামে পরিচিত। এই দর্শনে ‘বিশেষ’ নামে একটি পদার্থ স্বীকার করায় এর নাম বৈশেষিক দর্শন হয়েছে। নিচে বৈশেষিক দর্শনের ঈশ্বর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
ঈশ্বর (God) : বৈশেষিক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা মহর্ষি কণাদ তাঁর বৈশেষিক সূত্রে ঈশ্বর সম্পর্কে কোন আলোচনা করেন নি। কিন্তু পরবর্তী ভাষ্যকার শঙ্কর মিত্র ঈশ্বরের উল্লেখ করেছেন। ঈশ্বর বেদের রচয়িতা, তাঁর কোন ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে না। তিনি অনন্ত, সর্বজ্ঞ, নিত্য ইত্যাদি বলেছেন। শ্রীধর ও উদয়ন ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য নানাবিধ যুক্তি দেখিয়েছেন। পরবর্তীকালে যারা ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শনের সমন্বয়সাধনের চেষ্টা করেছেন; তাঁদের রচনায়ও ঈশ্বরের স্পষ্ট
উল্লেখ আছে। তাঁদের রচনায় ঈশ্বর সম্পর্কে নানাবিধ উক্তি আছে; যথা : ঈশ্বর সর্বজ্ঞ ও সর্বব্যাপী। তিনি সর্বপ্রকারের রাগ বা দ্বেষ ও সংস্কার বর্জিত; পরমাত্মা এক কিন্তু জীবাত্মা বহু; ঈশ্বর জগতের নিমিত্ত কারণ, আর পরমাণু হলো জগতের উপাদান কারণ; ঈশ্বর ও পরমাণুসহ অবস্থানকারী ইত্যাদি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বৈশেষিকদের পদার্থ সম্পৰ্কীয় মতবাদে ঈশ্বর সম্পর্কে যে আলোচনা করা হয়েছে তা দর্শনের আলোচনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।