অথবা, বৈশেষিক মতে অভাব বলতে কী বুঝ?
অথবা, অভাব সম্পর্কে বৈশেষিকদের অভিমত কী?
অথবা, অভাব কাকে বলে? বৈশেষিকদের মত লেখ।
উত্তর ভূমিকা বৈশেষিক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহর্ষি কণাদ। মহর্ষি কণাদের প্রকৃত নাম উলুক। কণাদ ও উলুক—এই দুই নাম অনুসারে তাঁর প্রণীত দর্শন ‘কণাদ দর্শন’ বা ‘উলুক্য দর্শন’ নামে পরিচিত। এই দর্শনে ‘বিশেষ’ নামে একটি পদার্থ স্বীকার করায় এর নাম বৈশেষিক দর্শন হয়েছে। বৈশেষিক মতে, পদার্থ সাত প্রকারের এবং সব পদার্থই
জ্ঞানের বিষয় বা প্রমেয়। বৈশেষিক সাত প্রকারের পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যথা : ক. ভাবপদার্থ এবং খ.অভাবপদার্থ । সকল অস্তিত্বশীল বস্তু ভাৰপদার্থ। যেমন- দ্রব্য, গুণ ইত্যাদি। বৈশেষিক স্বীকৃত সাতটি পদার্থের দ্রব্য, গুণ, কর্ম, সামান্য, বিশেষ এবং সমবায় এ ছয়টি ভাবপদার্থ।
অভাব (Non-existence) : অভাব হলো কোন কিছুর অস্তিত্বহীনতা। যেমন- রাতের আকাশে সূর্যের অভাব বললে আমরা বুঝি যে, রাতের আকাশে সূর্যের অস্তিত্ব নেই। অভাব একটি নঞর্থক পদার্থ (Negative category); এটি ভাব পদার্থের বিপরীত। বৈশেষিকগণ বলেছেন, অভাবকে অস্বীকার করা যায় না। টেবিলের উপর কলমটি আছে এটা যেমন সত্য, টেবিলের উপর দোয়াতটি নেই এটিও তেমন সত্য। সুতরাং অভাবকে একটি পদার্থরূপেই স্বীকার করতে হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বৈশেষিকদের পদার্থ সম্পর্কীয় মতবাদে অভাব সম্পর্কে যে আলোচনা করা হয়েছে তা দর্শনের আলোচনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।