বৈশেষিক দর্শন কী?

অথবা, বৈশেষিক দর্শন বলতে কী বুঝ?
অথবা, বৈশেষিক দর্শন কাকে বলে?
অথবা, বৈশেষিক দর্শনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
অথবা, বৈশেষিক দর্শনের পরিচয় সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর৷ ভূমিকা :
ভারতীয় দর্শনের সম্প্রদায়গুলোকে প্রধানত দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। যথা : ১. আস্তিক, ২. নাস্তিক। সাংখ্য, “যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা ও বেদান্ত এ ছয়টি দর্শন সম্প্রদায়কে আস্তিক বলা হয়। নিম্নে বৈশেষিক দর্শন আলোচনা করা হলো।
বৈশেষিক দর্শন : বৈশেষিক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহর্ষি কণাদ। মহর্ষি কণাদের প্রকৃত নাম উলুক। কণাদ ও উলুক—এই দুই নাম অনুসারে তাঁর প্রণীত দর্শন ‘কণাদ দর্শন’ বা ‘ঔলুক্য দর্শন’ নামে পরিচিত। এই দর্শনে ‘বিশেষ’ নামে.একটি পদার্থ স্বীকার করায় এর নাম বৈশেষিক দর্শন হয়েছে। কণাদের বৈশেষিকসূত্র’ বৈশেষিক দর্শনের প্রথম ও মূলগ্রন্থ। প্রশস্তপাদ-এর ‘পদার্থধর্মসংগ্রহ’ বৈশেষিক দর্শনের একটি প্রামাণিক গ্রন্থ। বৈশেষিক দর্শনের মূল গ্রন্থের নাম হলো বৈশেষিক সূত্র। বৈশেষিক দর্শনের বিভিন্ন আলোচ্যবিষয়ের মধ্যে বৈশেষিক পরমাণুবাদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বৈশেষিক পরমাণুবাদ এক হিসেবে প্রাচীনতম পরমাণুবাদ। বৈশেষিকদের মতে, আকাশ, কাল, দিক এবং আত্মা এ চারটি দ্রব্য এবং বিভু বা সর্বব্যাপী, মন নিত্য দ্রব্য, কিন্তু মন পরমাণু বিশেষ; ক্ষিতি হলো তেজ এবং বায়ু এ চারটি দ্রব্যের পরমাণু নিত্য। এছাড়া জগতের সব দ্রব্যই অনিত্য। এ জগতের যাবতীয় উৎপত্তিশীল দ্রব্যের মৌলিক উপাদান হলো পরমাণু।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতীয় দার্শনিক সম্প্রদায়ের পারস্পরিক আলোচনার দ্বারাই ভারতের প্রতিটি দর্শন সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। তাইতো ভারতীয় দর্শনের আস্তিক সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে বৈশেষিক দর্শন গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।