অথবা, বৈবাহিক অবস্থার উপর প্রভাব বিস্তারকারী নিয়ামকসমূহ তুলে ধর।
অথবা, বৈবাহিক অবস্থার উপর প্রভাব বিস্তারকারী নিয়ামকগুলো কী কী?
উত্তর৷ ভূমিকা : বিবাহ হচ্ছে আইনসম্মত সামাজিক বন্ধন বা চুক্তিবিশেষ। এটি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। মানুষের বৈবাহিক মর্যাদা বলতে অবিবাহিত, বিবাহিত, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তদের অনুপাতকে বুঝায়। মানুষের বৈবাহিক মর্যাদা স্থিতিশীল নয়। তা সময় ও অবস্থাভেদে পরিবর্তন হয়। তাই বিশ্বে বৈবাহিক অবস্থার মাত্রায় ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
প্রভাব সৃষ্টিকারী উপাদান : নিম্নে বৈবাহিক অবস্থায় প্রভাব সৃষ্টিকারী উপাদানগুলো আলোচিত হলো :
১. জলবায়ু : একটি দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিবাহের ক্ষেত্রে প্রভাব সৃষ্টিকারী উপায় হিসেবে বিশ্বের সর্বত্রই কাজ করে।
২. বয়স : বিবাহের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া। অর্থাৎ যৌবনপ্রাপ্ত না হলে বিবাহ সম্পন্ন হতে পারে না।
৩. যৌতুক : যৌতুক প্রথা বর্তমানে মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। যৌতুকের কারণে অনেক মেয়ে তালাকপ্রাপ্ত হয়ে বাবার বাড়িতে বাস করে।
৪. শারীরিক অক্ষমতা : বিবাহিত জীবনে স্বামী-স্ত্রী বন্ধনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হলো জৈবিক চাহিদা। বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর যৌন স্বীকৃতির মাধ্যমে পরিবার গঠন করে থাকে। যদি তাদের কেউ যৌন অক্ষম হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে এক পর্যায়ে বিচ্ছেদে পর্যবসিত হতে পারে।
৫. দারিদ্র্য : বিবাহিত জীবনে দারিদ্র্য মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করে। এ দারিদ্র্যের কারণে অনেকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও বিবাহকার্য সম্পাদন করতে পারে না।
৬. বেকারত্ব : বেকারত্ব বর্তমান সময়ে অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। বেকারত্বের কারণে জনগোষ্ঠী যৌবনপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও বিবাহিত জীবনে পদার্পণ করতে পারে না। কিংবা অনেকের বিয়ের বয়স খুব বেশি হয়ে যায়। আবার অনেক সময় লক্ষ্য করা যায়, একটা গোষ্ঠী সারা জীবন অবিবাহিত থেকে যায়।
৭. শিক্ষা : শিক্ষা মানুষের আচরণের বাঞ্ছিত পরিবর্তন হয়ে থাকে। অশিক্ষিত দম্পতি তুলনামূলকভাবে শিক্ষিত দম্পতির চেয়ে অসচেতন। ফলে বৈবাহিক জীবনে তাদের মধ্যে প্রজননের হার বেশি লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া তাদের মধ্যে অল্প বয়সে অধিকসংখ্যক বিয়ে হয়ে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বৈবাহিক অবস্থা জনসংখ্যা হ্রাসবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।