অথবা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কী?
অথবা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কাকে বলে?
অথবা, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলতে কী বুঝ?
অথবা, সায়িনটিফিক মেথড কী?
উত্তর ভূমিকা : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সামাজিক গবেষণার অন্যতম প্রধান পদ্ধতি। এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বিজ্ঞানী প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিষয়াবলি বর্ণনা, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে সাধারণ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরীক্ষিত জ্ঞান দ্বারা মানবকল্যাণে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যান।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি : মূলত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিই বিজ্ঞানের ভিত্তি। সাধারণ কথায় বিজ্ঞানী যে পদ্ধতি অনুসরণ করে গবেষণা কার্যক্রম চালান তাই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাঁদের কয়েকটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো :
সমাজবিজ্ঞানী হংসরাজ (Hansraj) উল্লেখ করেছেন যে, “বৃহৎ দৃষ্টিতে বিজ্ঞানী কর্তৃক কোন নিরপেক্ষ অথবা ধারাবাহিক জ্ঞান প্রতিষ্ঠাকল্পে ব্যবহৃত যে কোন অনুসন্ধান পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলে উল্লেখ করা যায়।”
সমাজবিজ্ঞানী ব্যারী এফ. এন্ডারসন (Barry F. Anderson) বলেছেন, “বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে ঘটনার বর্ণনা ও ব্যাখ্যাদানের লক্ষ্যে নিলিখিত বিধিমালা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায় : কার্যোপযোগী সংজ্ঞায়ন, সার্বিকীকরণ, নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ, পুনঃপুন পর্যবেক্ষণ, নিশ্চিতকরণ এবং সংগতিবিধান।” (The scientific method is here defined as the following set of rules for describing and explaining phenomena; operational definition, generility controlled observation, repeated observation, confirmation and consistency.)
জি. এ. লুন্ডবার্গ (G. A. Lundberg) বলেছেন, “বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হলো তথ্যরাজির এক ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও শ্রেণিকরণ।”
জি. এ. লুন্ডবার্গ (G. A. Lundberg) আরো বলেছেন, “বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাথে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের স্বীকৃতি সাধারণীকরণ এবং সিদ্ধান্তের পার্থক্য, রীতিসিদ্ধতা, কঠোরতা, পরিবর্তনশীলতা এবং সিদ্ধান্তের সাধারণ যথার্থতার মাত্রার উপর নির্ভর করে।” (The main difference between our day to day generalizations and conclusions are usually recognized as scientific method lies in the degree for formality, rigorousness, variability and general validity of the latter.)
ওয়ালিস ও রবার্টস (Wallis & Roberts) বলেছেন, “একদিক থেকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অলীক। কারণ এখানে কোন আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া নেই, যা একজন বিজ্ঞানীকে বলতে পারে যে কিভাবে শুরু করতে হবে, এরপর কি করতে হবে অথবা কি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে।”
জে. এ. হগস (J. A. Hughes) এর মতে, “বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে পৃথক বা স্বতন্ত্র নিয়মের পদ্ধতিসমূহ ব্যবহার করে দক্ষতা সহকারে উপাত্ত বা জ্ঞান অর্জন করা হয়।”
উপসংহার : উপর্যুক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায়, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হলো এমন একটি যুক্তিভিত্তিক ও অনুসন্ধানমূলক প্রক্রিয়া, যা সমস্যা চিহ্নিত করে ও সমাধানের পদ্ধতি নির্দেশ করে এবং একই অবস্থায় বিজ্ঞানীদের দ্বারা সম্পাদিত হলে একই ফলাফল প্রদানের ক্ষমতা রাখে।