বিনেসিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা বলতে কী বুঝ?

রকেট সাজেশন
রকেট সাজেশন

অথবা, বিনেসিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষার সংজ্ঞা দাও ।উত্তর:

ভূমিকা :বিনেসিমো বুদ্ধি অভীক্ষার একটি উপাদান হলো এমন একটি মানসিক গুণমূলক যা ব্যক্তির ক্ষমতা এবং সমস্যা সম্পর্কে বিশেষ ধারণা দেওয়ার সাথে সাথে সমস্যা অবগত করে। এটি একটি সামাজিক সমস্যা বা অদৃশ্য সমস্যা নির্ধারণ করার জন্য ব্যক্তিগত বা সংগঠিত সংগঠনের কাজে আসতে পারে। বিনেসিমো বুদ্ধি অভীক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির সমস্যা গুলি চিহ্নিত করে সামাজিক সাধারণ প্রতিষ্ঠানের প্রয়োগ করার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করা হতে পারে।

বিনেসিমোঁ বুদ্ধি অভীক্ষা : ফরাসি মনোবিজ্ঞানী আলফ্রেড বিনে এবং তাঁর সহযোগী থিওডোর সিমোঁ ১৯০৫ সালে প্রথম বুদ্ধি অভীক্ষা উদ্ভাবন করেন। এ অভীক্ষাটি বিনেসিমোঁ স্কেল নামে। পরিচিত। তাঁর যুক্তি, পার্থক্য নির্ণয়, বোধগম্য ও বিচারক্ষমতা এবং অন্যান্য বিষয়ে কতকগুলো প্রশ্ন তৈরি করে তা স্কুলে যেসব ছাত্র সাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছিল তাদের উপর প্রয়োগ করেন। যেসব ছাত্র যে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে সক্ষম হয়েছিল, তারা সে ধরনের ৩০টি প্রশ্ন নির্বাচন করে সহজ হতে কঠিন। এভাবে ক্রমান্বয়ে সাজিয়ে একটি স্কেল তৈরি করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, স্বল্প বুদ্ধিসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীরা এ স্কেলের কয়টি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে তার ভিত্তিতে তাদের মানসিক বিকাশ পরিমাপ বা নির্ধারণ করা। এ অভীক্ষায় কিছু ত্রুটি ছিল। যেমন- এর বিষয়গুলো বয়সের অনুপাতে সাজানো ছিল না। এছাড়া কিছু বিষয় ছিল যার জন্য ছাত্রদের বিশেষ শিক্ষাদানের দরকার হতো। ১৯৮০ সালে বিনেসিমোঁ অভীক্ষার দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এ সংস্করণে বিষয়গুলো বয়স অনুপাতে সাজানো হয়। এখানে সকল বিষয়কে (প্রশ্নকে) ৩ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত স্তরে ভাগ করা হয়। প্রত্যক বয়সের জন্য বা উপঅভীক্ষার জন্য ৪ থেকে ৮টি প্রশ্ন রাখা হয়। এ অভীক্ষায় শিশুদের কোন বিশেষ শিক্ষাদানের প্রয়োজন হয় না। কারণ এ অভীক্ষায় এমন ধরনের প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ঐ বয়সের শতকরা ৬০-৭৫ ভাগ শিশু সম্পাদন করতে সক্ষম হয়। বিনেসিমোঁ অভীক্ষার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এ অভীক্ষাতে প্রথম মানসিক বয়সের (Mental age) ধারণা ব্যবহার করা হয়। কারও প্রকৃত বয়স যাই হোক না কেন, সে যে বয়সের উপযোগী প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম তাই হলো তার মানসিক বয়স। জন্মের পর হতে যে বয়স গণনা করা হয় তাকে প্রকৃত বয়স বলা হয়। মানসিক বয়স প্রকৃত চেয়ে বেশি হতে পারে আবার কমও হতে পারে। যেমন- ৫ বছর বয়সের শিশু যদি ৭ বছর বয়সের উপযোগী প্রশ্নের উত্তর নির্ভুলভাবে দিতে পারে, তাহলে তার মানসিক বয়স ৭ বছর। আবার ঐ শিশু যদি ৫ বছরের উপযোগী প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হয় এবং কেবল ৪ বছরের উপযোগী প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে, তাহলে তার মানসিক বয়স হবে ৪ বছর। আবার ঐ শিশুটি যদি ৫ বছরের উপযোগী প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিতে সমর্থ হয় কিন্তু ৬ বছর বয়সের উপযোগী প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তার মানসিক বয়স হবে ৫ বছর।

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, শিল্পকারখানায় এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কর্ম নির্বাচনে মনস্ত পাত্ত্বিক অভীক্ষা একটি যুগোপযোগী এবং তথ্য সমৃদ্ধ প্রক্রিয়া। মনোবৈজ্ঞানিক অভীক্ষাগুলো যথার্থ এবং সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করে অতি সহজেই উপযুক্ত কর্মী নির্বাচন করা সম্ভব। একারণেই শিল্পোন্নত দেশে ক্রমেই এর পরিসর এবং বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।