অথবা, বিজ্ঞাপনে নারীকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার জন্য একটি সুপারিশমালা তৈরি কর।
অথবা, কিভাবে নারীকে বিজ্ঞাপনে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা যায়?
উত্তরা৷ ভূমিকা : বিজ্ঞাপনে নারীকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার জন্য সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে সিডও এবং পিএফএতে নারী ও মিডিয়া সম্পর্কে যে বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং যে লক্ষ্য অর্জনের কথা বলা হয়েছে তা অর্জন করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞাপনে নারীকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার জন্য সুপারিশমালা : বাংলাদেশে বিভিন্ন
বিজ্ঞাপনে নারীর রূপায়ণ ও অংশগ্রহণ বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশমালা নিচে দেওয়া হলো :
১. বিজ্ঞাপন বিষয়ক জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিমালা ও আচরণবিধি প্রণয়ন করা : বিজ্ঞাপন বিষয়ক জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিমালা ও আচরণবিধি আবশ্যিকভাবে প্রণয়ন করা যেতে পারে। আশেপাশের দেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিমালা ও আচরণবিধি রয়েছে। সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পারে এবং সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিবর্গ ও বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে এ রকম একটি নীতিমালা ও আচরণবিধি জরুরিভিত্তিতে প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
২. জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দান : জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মত সরকারি সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো বিজ্ঞাপন সংস্থায় কর্মরত কর্মী ও কর্মকর্তা পর্যায়ে জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করতে পারে।
৩. অ্যাডভোকেসি দান : যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগসমূহ, গণমাধ্যম বিষয়ক সংস্থাসমূহ, বেসরকারি সংস্থাসমূহ, প্রেসার গ্রুপ ও অ্যাক্টিভিস্ট, সমাজ সচেতন ব্যক্তিবর্গ সেমিনার, আলোচনা, বিজ্ঞাপন সংস্থাসমূহের সঙ্গে মত বিনিময়, লেখালেখি, অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে বিজ্ঞাপনে জেন্ডার সংবেদনশীলতার বিষয়টিকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে পারে।
৪. সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণ : যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগসমূহ ও বিজনেস স্টাডিজের বিভিন্ন বিভাগে বিজ্ঞাপন কলা বিষয়ক সিলেবাস অন্তর্ভুক্তকরণ ও সিলেবাসে বিজ্ঞাপনের এথিকস ও জেন্ডার সংবেদনশীলতার বিষয়টি অন্ত
র্ভুক্ত করতে পারে ।
৫. নারীর সম উপস্থাপন : বিজ্ঞাপনে নেপথ্য কণ্ঠ ও অন্যান্য সিদ্ধান্তগ্রহণমূলক অংশে পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও সমভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সিংহভাগ বিজ্ঞাপনে নারীকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা শুধু গত্বাঁধা এবং খণ্ডিতই নয়, কোন কোন ক্ষেত্রে রীতিমতো সম্মানহানিকর। কামনা উদ্রেককারী বস্তুতে রূপান্তরকরণ করাই নারীকে অধীনস্ত রাখবার মৌলিক প্রক্রিয়া বলে চিহ্নিত করেছেন ম্যাককিলন। বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের মূল্যায়নের জন্য একটি কমিশন গঠন করতে হবে। এ কমিশনের কাজ হবে যা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সুষ্ঠুভাবে উপস্থাপিত হওয়ার সাংবিধানিক অধিকারকে অক্ষুণ্ণ রাখবে।