অথবা, বিকল্প শর্ত হিসেবে কৃত্রিমতা মুক্ত সম্পর্কে লিখ।
অথবা, বিকল্প শর্ত হিসেবে কৃত্রিমতা মুক্ত কী?
অথবা, বিকল্প শর্ত হিসেবে কৃত্রিমতা মুক্ত কাকে বলে?
উত্তর।। ভূমিকা : প্রত্যেক বিজ্ঞানেই নিজস্ব বিষয়বস্তুর আঙ্গিকে তার অনুধ্যান বা গবেষণা পদ্ধতি নির্ভর করে।মনোবিজ্ঞান মানুষের আচরণ নিয়ে কাজ করে এবং এ আচরণের ধরনে রয়েছে ব্যাপকতা। তাই মনোবিজ্ঞানে ব্যবহৃত
পদ্ধতিসমূহেও রয়েছে ভিন্নতা ও ব্যাপকতা। এক্ষেত্রে কেবল একটি মাত্র পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুধ্যান পরিচালনা সম্ভব নয়। এছাড়াও নতুন নতুন গবেষণা পদ্ধতির অনুসন্ধান ও তার প্রয়োগে মনোবিজ্ঞানীগণ সর্বদা সচেষ্ট।
বিকল্প শর্ত : এটি হচ্ছে এমন সব অবস্থা, যা সম্মিলিতভাবে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে। যেমন- উপরের উদাহরণে কৈশোরে পরিবারে পিতার দৈহিক অনুপস্থিতি অথবা শিশুর প্রতি পিতার অস্বাভাবিক আচরণ উভয়েই সন্তানের মাদকাসক্তির ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে। এসব শর্তই বিকল্প শর্ত হিসেবে বিবেচিত।
কৃত্রিমতা মুক্ত : বিশ্লেষণাধীন চলকদ্বয়ের মধ্যকার সম্পর্কটি কৃত্রিমতা মুক্ত রাখার চেষ্টা করা গবেষকের একটি বিশেষ দায়িত্ব। এখানে কৃত্রিমতাহীনতা বলতে চলকদ্বয়ের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে তৃতীয় কোন চলক বা উপাদানের
অনুপস্থিতিকে বুঝান হয়। ব্যাপকার্থে আনুষঙ্গিক সকল উপাদানের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে সংশ্লিষ্ট নির্ভরশীল চলকের উপর স্বাধীন চলকের প্রভাব নিরূপণ করাই সম্পর্কের কৃত্রিমতাহীনতা। কৃত্রিমতাহীন সম্পর্ক চলকের মধ্যকার একটি সহজাত কার্য-কারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত প্রদান করে এবং তা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়। যেমন- কৃতিত্বের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের প্রভাব অকৃত্রিমভাবে নিরূপণ করতে হবে প্রশিক্ষণার্থীর বয়স, শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা, প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি চলকের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য বিষয়। পরীক্ষণকে অনেক সময় ‘Controlled laboratory study’ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। ‘নিয়ন্ত্রণ’ হচ্ছে পরীক্ষণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিবেচ্য এবং এ নিয়ন্ত্রণ হতে হবে অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে। তাই পরীক্ষণে কার্য-কারণ সম্বন্ধের স্বরূপ ও সম্পর্ক নিৰ্ণায়ক শর্তাবলির গুরুত্ব মনোবিজ্ঞানে অস্বীকার করা যায় না।