অথবা, ধিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার নেতিবাচক দিক কী?
অথবা, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার বিপক্ষে যুক্তি দাও
অথবা, বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার ত্রুটিসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তরা ভূমিকা : দুটি কক্ষ থাকলে তাকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বলা হয়। স্যার হেনরি মেইন, জে এস মিল প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভাকে সমর্থন করেছেন। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার পক্ষে যে যুক্তি দেখানো হয় তা কতটা জোরালো বা যুক্তিযুক্ত সে সম্পর্কে অধিকাংশ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সন্দেহ পোষণ করেছেন। কেননা বর্তমানে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বিভিন্ন সমস্যায় জড়িত।
দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার অসুবিধা : রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ ক্ষিবিশিষ্ট আইনসভার বিপক্ষে নিম্নলিখিত গুরু যুক্তিগুলো নির্দেশ করেন-
১. দ্বিতীয় পরিষদ অনাবশ্যক : ফরাসি লেখক আবেসিয়ে বলেছেন, আইন জনগণের ইচ্ছারই প্রকাশ একই বিষয়ে জনগণের ইচ্ছা দূরকরণ হতে পারে না যে আইনসভা জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিফলিত করে সেই আইনসভা কখনো দুটি অংশে বিভক্ত হতে পারে না। যেখানে আইনসভা দুটি অংশে বিভক্ত সেখানে বিরোধ বিশৃঙ্খলা অবশ্যয়াবী।
২. ঐক্যের পথে বাধা: লা মার্টিন, ড্যুগুই প্রমুখ মনে করেন আইনসভায় দুটি কক্ষ পরিষদের অস্তিত্ব দেশের ঐক্য ও সার্বভৌমিকতার বিরোধী। একটি পরিধন থাকলে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিভেনও বিচ্ছিন্নতা প্রকাশ পাবে না, দেশের বিচিত্র ও বিভিন্নমুখী শক্তিকে একটি লক্ষ্যেই চালিত করা যাবে।
৩. দ্বিতীয় পরিষদ অগণতান্ত্রিক: নীল ও বিশেষ স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে হলে দ্বিতীয় পরিষনে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দেয়া হয়। অধিকাংশ রাষ্ট্রেই দ্বিতীয় পরিষদের সদস্যরা হয় মনোনীত হন অথবা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। স্বভাবতই এ পরিষদের সদস্যরা দায়িত্ব ।
৪. আইন পাসে বিলম্ব হয় : দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভায় আইন পানের ক্ষেত্রে অযথা বিলম্বের সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় পরিষদ অকারণে প্রথম পরিষদ প্রেরিত বিলকে বিলম্ব করিয়ে দেয়। ব্রিটেনের লর্ড সভার রক্ষণশীল মনোভার কমসতার বহু জনকল্যাণকর আইনের পথে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে এমন নজীর মেলে।
৫. ব্যয় অধিক: দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইন সভায় অধিক পরিমাণে ব্যয় হয়। সদস্যদের সম্মানী, ভ্রমণ ও অবস্থান ভাতাসহ দেয় সরকারি অর্থ বিগুণ পরিমাণে খরচ হয়। তাছাড়া সাংগঠনিক ব্যয় আছে। দরিদ্র দেশের জন্য দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা অযথা অপব্যয় ছাড়া আর কিছুই না।
উপসংহার: আলোচনার শেষ প্রান্তে এসে আমরা বলতে পারি যে, ধিকক্ষ বিশিষ্ট তার কিছু সুবিধা থাকলেও এর অসুবিধা অনেক বেশি। তাই আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় দি নি আইনসভা পরিত্যাজ্য।কেননা সরকারের প্রয়োজনীয় মুহূর্তে বিকল্প আইনসভা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ।