বাকশাল কী?

অথবা, বাকশাল গঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে লিখ।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে বাকশাল প্রতিষ্ঠা ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাকশাল গঠনের মাধ্যমে কার্যত সরকার একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। সমগ্র দেশে তৎকালীন সময়ে যে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয় তার থেকে পরিত্রাণ পেতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান বাকশাল ঘোষণা করে সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনী গৃহীত করেন।
বাকশালের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : নিচে বাকশালের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বর্ণনা করা হলো :
১. বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে বর্ণিত জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র এ চারটি মৌলনীতি বাস্তবায়ন করা।
২. বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি বিধান নিশ্চিত করা।
৩. নরনারী ও ধর্ম-বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা।
৪. মানব সত্তার মর্যাদা ও মূল্যবোধের স্বীকৃতি দান করা।
৫. মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিকাশের পরিপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করা।
৬.. ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতার বিলোপসাধন করা।
৭. কৃষক ও শ্রমিকসহ মেহনতি মানুষের উপর শোষণের অবসান।
৮. অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যরক্ষাসহ মানুষের দৈনন্দিন জীবন ধারণের মৌলিক সমস্যার সুসমাধান বিশ্বশান্তি ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের সকল প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দেশের সার্বিক বিকাশ বিভিন্ন মতাদর্শ ও দ্বন্দ্বের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। রাজনীতিতে ব্যাপক মতদ্বৈততা, অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক সংকট, সামাজিক সংকট, দুর্নীতি, ঘুস, সংহতির সংকট প্রকট রূপে আবির্ভূত হয় যা মোকাবিলা করার জন্য বাকশাল গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু এটি কার্যকর না হওয়ায় এর মহৎ উদ্দেশ্য অর্জিত হয়নি।