বাংলাদেশে যুব কল্যাণ কর্মসূচিসমূহ উল্লেখ কর।

অথবা, বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত যুব কল্যাণ কর্মসূচিসমূহ তুলে ধর।
অথবা, যুব কল্যাণে গৃহীত জাতীয় কর্মসূচিসমূহ আলোচনা কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা :
একটি দেশের যুব সম্প্রদায়ই সে দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ। বাংলাদেশে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুব সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই যুব সম্প্রদায়ই দেশ ও জাতির আশাভরসার প্রতীক। তারাই নিকট ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার কর্ণধার হিসেবে কাজ করবে। তাই তাদেরকে যথাযথভাবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে তাদেরকে মানবসম্পদে রূপান্তর করা ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে জড়িত করা অপরিহার্য। যুব সম্প্রদায় যাতে বিপথগামী না হয়, হাতাশা, গ্লানি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড যাতে তাদের গ্রাস না করে সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।এতে যুব সম্প্রদায়ের যেমন কল্যাণ হবে তেমনি দেশ ও জাতিরও নিকট ভবিষ্যতে একটি প্রগতিশীল ও প্রতিশ্রুতিশীল
দেশ গড়ার কারিগর খুঁজে পাবে।
বাংলাদেশে যুব কল্যাণ কর্মসূচি : বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৩ ভাগের ১ ভাগে বেশি হলো যুব সম্প্রদায়। সাধারণত ১৫-৩০ বছর বয়সীদের যুব সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে বাংলাদেশে নতুন যুবনীতি অনুসারে ১৮ থেকে ৩৫ বয়সী জনগোষ্ঠীকে যুব সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। Banglasesh Statistical Pocket Book ২০০১ অনুসারে এদেশে ১৫-১৯ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৯৫,০০,০০০ জন, ২০-২৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৯৩,৬৫,০০০ জন, ২৫-২৯ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৯,৪৭,৫০০ জন এবং ৩০-৩৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৬৭,৯৭,০০০ জন। অর্থাৎ ১৫-৩৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা ৩,৫১,৩৭,০০০ জন। অন্যদিকে, ২০-৩৪ বছর বয়সী জনসংখ্যা রয়েছে ২,৫৬,৩৭,০০০ জন। সুতরাং আমাদের দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশই হলো যুব সম্প্রদায়। এই যুব সম্প্রদায়ের উন্নতি বা কল্যাণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব। নিম্নে যুব উন্নয়নে গৃহীত সরকারি কর্মসূচিগুলো আলোচনা করা হলো :
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যক্রম : যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালায়ধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত স্মরণিকা (২০০৬) অনুযায়ী যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যাবলি তুলে ধরা হলো :
১. বেকার যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি,
২. প্রশিক্ষিত যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান ও যুব ঋণ কর্মসূচি,
৩. দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি,
৪. বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি, যেমন— এইচআইভি/এইডস/এসটিডি প্রতিরোধ, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, পরিবার কল্যাণ ইত্যাদি,
৫. যুব নেতৃত্ব বিকাশের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি,
৬. স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনসমূহকে বিভিন্ন জাতীয় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তকরণ কর্মসূচি,
৭. জনসংখ্যা এবং পরিবার কল্যাণ কর্মকাণ্ডে যুবকদের সম্পৃক্তকরণ কর্মসূচি,
৮. পরিবেশ উন্নয়ন এবং গোষ্ঠী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুবকদের সম্পৃক্তকরণ কর্মসূচি,
৯. যুব বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা কর্মসূচি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, যুবসমাজকে সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত করে জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্তকরণ
এবং সঠিক দিকনির্দেশনা, জ্ঞান ও দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে বহুমুখী কর্মসূচি চালু রয়েছে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%a4%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a8-%e0%a6%95/