অথবা, বাংলাদেশে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের আইনগত দিকসমূহ উল্লেখ কর
অথবা, বাংলাদেশে মাঠকর্ম অনুশীলনের আইনগত দিকসমূহ বর্ণনা কর।
অথবা, বাংলাদেশে মাঠকর্ম অনুশীলনের আইনগত দিকসমূহ বিশ্লেষণ কর।
উত্তর।৷ ভূমিকা : বাংলাদেশে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে আলাদা কোনো আইনগত কাঠামো তৈরি করা হয়নি।তবে মাঠকর্ম অনুশীলন বা ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সমাজকর্মীদের সাধারণ আইন মেনে কাজ করতে হয়। এ সাধারণ আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হলে সমাজকর্মীদেরকে আইনের সম্মুখীন হতে হয়।
বাংলাদেশে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের আইনগত দিক
নিয়ে বাংলাদেশে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের আইনগত দিকসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. আচরণ : সমাজকর্মীকে মাঠকর্ম অনুশীলনকারীদের সাথে কাজ করার ক্ষেত্রে অসদাচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে।সমাজকর্মী মাঠকর্ম অনুশীলনকারীদের সাথে অসদাচরণ করলে বা অশোভনীয় আচরণ করলে তার জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে।
২. যৌন সম্পর্ক : মাঠকর্ম প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে সমাজকর্মীরা কোনো যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন না।সমাজকর্মী প্রশিক্ষণার্থীর কোনো নিকট আত্মীয় বা কাছের কারো সাথেও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন না। এ ধরনের কাজ করলে সমাজকর্মীকেও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
৩. যথাযথ তদারকি : সমাজকর্মীরা মাঠকর্ম প্রশিক্ষণার্থীদের যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করবেন।প্রশিক্ষণার্থীরা যাতে যথাযথভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন সমাজকর্মী সে ব্যবস্থা করবেন। এক্ষেত্রে সমাজকর্মী অবহেলা করলে তাকেও জবাবদিহি করতে হবে ।
৪. বৈষম্যমূলক আচরণ : সমাজকর্মীরা মাঠকর্ম প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে বৈষম্যমূলক ব্যবহার করতে পারবেন না।সকল প্রশিক্ষণার্থী যাতে সমভাবে প্রশিক্ষণসুবিধা গ্রহণ করতে পারেন সমাজকর্মী সে ব্যবস্থা করবেন।
৫. গোপনীয়তা প্রকাশ করা : সমাজকর্মীরা তার ক্লায়েন্টকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে অবশ্যই গোপনীয়তা বজায় রাখবেন।গোপনীয়তা ভঙ্গের কারণে সমাজকর্মী পেশাগত সেবা প্রদানের লাইসেন্স হারাতে পারে।
৬. অম্রাব্য ভাষা : সমাজকর্মীরা তার ক্লায়েন্টকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে অশ্রাব্য ভাষা প্রয়োগ করতে বা গালিগালাজ করতে পারবেন না। এটি আইনের পরিপন্থী।
৭. আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার : সমাজকর্মী তার সাহায্যার্থীকে অবশ্যই আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রদান করবেন। সমাজকর্মী তার সাহায্যার্থীর এ অধিকার খর্ব করে সেবা দিতে পারবেন না।
৮. অসততা : সমাজকর্মীরা তার ক্লায়েন্টকে সাহায্য করার কোনো ক্ষেত্রে অবশ্যই অসততার পরিচয় দিবেন না।অসততার জন্য সমাজকর্মী আইনত শাস্তি পেতে পারেন।
৯. সেবাপ্রদানে বাধ্যবাধকতা : একজন পেশাদার সমাজকর্মকে সেবা নিতে আসা ক্লায়েন্টকে অবশ্যই সেবা প্রদান করতে হবে।কাউকে সেবা প্রদানে অস্বীকার করা যাবে না।
১০. আর্থিক স্বচ্ছতা : সমাজকর্মীকে কাজ করার ক্ষেত্রে আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। তিনি কোনো দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারবেন না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় সমাজকর্মীদের মাঠকর্ম অনুশীলনে অবশ্যই উপরিউক্ত আইনগত দিক মেনে কাজ করতে হবে।সমাজকর্মীরা দুর্নীতিমুক্ত হয়ে স্বচ্ছভাবে কাজ করবেন। তারা কাজের সময় কোনো বৈষম্য করবেন না।