অথবা, আমাদের দেশের এইডস প্রতিরোধের পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর।
অথবা, বাংলাদেশে কিভাবে এইডস প্রতিরোধ করা যায়?
উত্তর৷ ভূমিকা : এইডস বা AIDS একটি মারাত্মক ব্যাধি। এর পরিণাম নিশ্চিত অকাল মৃত্যু। বাংলাদেশে এইডস’র বিস্তার শুরু হয় ১৯৮৯ সালে এবং সর্বপ্রথম এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১৯৯০ সালে। বর্তমানে এইডস আক্রান্ত রোগী প্রায় এক হাজার। এতে করে বুঝা যায়, এইডস এর প্রকোপ অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অপেক্ষাকৃত কম হলেও এইডস নামক ঘাতক ব্যাধি থেকে তা নিরাপদ দূরত্ব নেই। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে যেভাবে দ্রুত এইডস ছড়িয়ে পড়ছে তার প্রেক্ষাপটে দেশের সুশীল সমাজ মাত্রই আতঙ্কিত।
বাংলাদেশের AIDS প্রতিরোধ প্রোগ্রাম : মানব সভ্যতার ইতিহাসে এইডস সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাধি। এটি প্রতিরোধে সুচিন্তিত এবং দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। তা হলো- বাংলাদেশে HIV প্রতিরোধ কর্মসূচি ১৯৮৫ সনে প্রথম জাতীয় AIDS কমিটি গঠন, ১৯৮৮ সালে স্বল্প মেয়াদি প্যান অব এ্যাকশন, ১৯৮৯ সালে মিডিয়াম টার্ম প্যান অব এ্যাকশন, ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এক্সটেন্ডেড ইন্টেরিম প্যান অব এ্যাকশন, ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এইচপিএসপি’র অধীনস্থ ইএসপির আওতাভুক্ত হয়ে অদ্যাবধি চলে আসছে।
আর্থিক সহায়তা প্রদান : ১৯৯৮ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জিপি-এর (Globazl Programme in health) মাধ্যমে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে। ১৯৯৫ সালের পর থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বি-বার্ষিক চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আর্থিক ও কার্যকরী সাহায্য প্রদান করছে। এ প্রক্রিয়া বর্তমান কাল পর্যন্ত চালু আছে।
১. ১৯৯৬ থেকে UNDP দ্বি-বার্ষিক চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচির উপর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে।
২. ২০০০ সাল থেকে World Bank এবং DFID ক্রেডিট এগ্রিমেন্ট’ এর মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এইডস হচ্ছে জীবননাশকারী ব্যাধি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে এ হার কম। সুতরাং বাংলাদেশে এইডস পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।