বাংলাদেশের সমাজে বিবাহের ধরন সম্পর্কে আলোচনা কর।
অথবা, আমাদের সমাজে প্রচলিত বিবাহের ধরন সম্পর্কে বর্ণনা দাও ৷
অথবা, বাংলাদেশের সমাজের বিবাহের শ্রেণিবিভাগসহ বর্ণনা কর।
অথবা, বাংলাদেশের সমাজে বিবাহের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর৷ ভূমিকা : বিবাহ ও পরিবার সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম আদি প্রতিষ্ঠান হলো এ দু’টি। বিশ্বে মানব সৃষ্টির প্রথম হতেই সমাজ বিদ্যমান ও সমাজের প্রাথমিক সাংগঠনিক রূপ পরিবার। আর পরিবার গঠনের
পূর্বশর্ত হলো বিবাহ। সামাজিক জীবন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য বিবাহ ও পরিবার অন্যতম উপাদান। মানবজীবনে বিবাহ ও পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। মানবজীবনের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য পরিবার এর প্রয়োজনীয়তা
অনেক। সুতরাং, বিবাহ ও পরিবার অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সেজন্য সুষ্ঠু পরিবার গঠন ও পরিচালনার জন্য সমাজ স্বীকৃত বিবাহের প্রয়োজনীয় অনস্বীকার্য।
বিবাহ ব্যবস্থা : বিবাহ হলো এমন একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যার উপর পরিবার সমাজ বিশেষভাবে নির্ভরশীল 1 আর বিবাহ পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত। বাংলাদেশে যে বিবাহ ব্যবস্থা রয়েছে তা অনেক পরিবর্তিত রূপ। আদিম সমাজের ‘বিবাহ ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। আমাদের সমাজে বিবাহ ব্যবস্থা বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, বিভিন্ন নিয়মনীতি, আচার অনুষ্ঠান ও রেওয়াজ ইত্যাদির মাধ্যমে বিবাহের কাজ সম্পন্ন হয়। নিম্নে বাংলাদেশের বিবাহ ব্যবস্থার ধরন উল্লেখ করা হলো :
ক. একক বিবাহ : একজন পুরুষ বা একজন মহিলা দাম্পত্য জীবনযাপন করাকে একক বিবাহ ব্যবস্থা বলে।
`ংলাদেশে একক বিবাহ ব্যবস্থার প্রবণতা বেশি।
খ. বহুবিবাহ : যখন কোনো পুরুষ বা নারী এক বা একাধিক স্বামী বা স্ত্রী গঠন করে, তখন তাদের বহুবিবাহ বলে ।্যপাত্রপাত্রী নির্বাচন : আমাদের দেশে বিবাহ ব্যবস্থার অন্যতম উপাদান হলো পাত্রপাত্রী নির্বাচন। পাত্রপাত্রী নির্বাচন
সেসব বিষয়ের উপর নির্ভরশীল।
১. পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা : পরিবারের আর্থিক অবস্থার উপর বিবাহ অনেকটা নির্ভরশীল। পরিবারের অবস্থা যদি ভালো হয়, তাহলে পাত্রপাত্রীর বিয়ে অনেক সুন্দর ও নির্ঝঞ্ঝাট হয়।২. জাত ও বংশ : বাংলাদেশে বিবাহ ব্যবস্থার অন্যতম ধরন হলো জাত ও বংশ নির্বাচন। মুসলিমরা সাধারণত
শেখ, সৈয়দ, চৌধুরী বংশের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। আর হিন্দুরা নিজেদের বর্ণ অপরিবর্তিত রাখে। যেমন- ব্রাহ্মণরা ব্রাহ্মণদের সাথে বিবাহ প্রথায় বিশ্বাসী। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেসব বিবাহ লক্ষ্য করা যায়। তা নিম্নরূপ : অনুলোম বিবাহ ও
ক.
খ. প্রতিলোম বিবাহ।
৩. গোষ্ঠী বিবাহ : গোষ্ঠী বিবাহ হলো একই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক পুরুষ, একাধিক স্ত্রীলোক গ্রহণ করে তাকে
গোষ্ঠী বিবাহ বলে । বাংলাদেশে এ বিবাহ সাধারণত উপজাতিদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যায় ।
৪. শিক্ষাগত যোগ্যতা : শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর বিবাহ অনেকটা নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে পাত্রপাত্রীকে নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে উপস্থাপিত করে শহুরে পরিবারে সাধারণত মেধা, জ্ঞান, যোগ্যতা, নিপুণতা ইত্যাদির উপর নির্ভর
করে। অন্যদিকে, কৃষিকাজের দক্ষতাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর নির্ভর করে যেসব বিবাহগুলো
ক. সমবিবাহ ও
সম্পন্ন হয় তা হলো :
খ. অসম বিবাহ।
৫. সামাজিক মর্যাদা : সামাজিক মর্যাদা বিবাহ ব্যবস্থায় অন্যতম একটি নিয়ামক। পরিবারের সামাজিক মর্যাদা না থাকলে বিবাহ ব্যবস্থায় কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।
৬. পাত্রপাত্রীর মনোনীতি করার ধরন : আমাদের দেশে বর্তমানে পাত্রপাত্রীদের নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ধরনের ব্যবস্থায় দু’টি দিক লক্ষ্য করা যায়।
ক. স্বনির্বাচিত বিবাহ : পাত্রপাত্রী যখন নিজে জীবন সাথিকে মনোনীত করে, তখন তাকে Romantic Marriage বলে।
খ. সংযোজিত বিবাহ : অভিভাবক বা আত্মীয়স্বজন দ্বারা পাত্রপাত্রী মনোয়ন করে বিবাহের ব্যবস্থা করা হয়, তখন এ
ধরনের বিবাহকে সংযোজিত বিবাহ বলে।
৭. যৌতুক প্রথা : আমাদের সমাজে যৌতুক প্রথা বিদ্যমান। হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের মধ্যে এ প্রথা প্রচলিত। হিন্দু সমাজে পণ প্রথায় মেয়েদের এক বিশাল অঙ্কের অর্থ প্রদান করা হয়। আর মুসলমানদের যৌতুক দেওয়া হয়
টাকা বা আসবাবপত্র। দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে যৌতুকের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার নারী আর শহুরে এলাকায় যৌতুক দেওয়াকে একটি ফ্যাশানে পরিণত হয়েছে। আমাদের সমাজে বিবাহ ব্যবস্থায় যৌতুক প্রথা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিশেষে আমরা একথায় উপনীত হতে পারি যে, বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও আদিম সমাজের তুলনায় আধুনিক সমাজের বিবাহ ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। আমাদের
সমাজব্যবস্থায় বিবাহ ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করলে আরো অনেক নিয়মকানুন আচার অনুষ্ঠান ও রেওয়াজ আছে। আমাদের সমাজে বিবাহ ব্যবস্থায় যে পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে আমাদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গলের জন্য উচিত হবে বিবাহ ব্যবস্থা আধুনিক করার জন্য ব্যাপক গবেষণা, যাতে আমরা এ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারি।
ত বিবাহের ধরন সম্পর্কে বর্ণনা দাও ৷অথবা, বাংলাদেশের সমাজের বিবাহের শ্রেণিবিভাগসহ বর্ণনা কর।অথবা, বাংলাদেশের সমাজে বিবাহের শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর।উত্তর৷ ভূমিকা : বিবাহ ও পরিবার সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম আদি প্রতিষ্ঠান হলো এ দু’টি। বিশ্বে মানব সৃষ্টির প্রথম হতেই সমাজ বিদ্যমান ও সমাজের প্রাথমিক সাংগঠনিক রূপ পরিবার। আর পরিবার গঠনেরপূর্বশর্ত হলো বিবাহ। সামাজিক জীবন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য বিবাহ ও পরিবার অন্যতম উপাদান। মানবজীবনে বিবাহ ও পরিবারের ভূমিকা অপরিসীম। মানবজীবনের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য পরিবার এর প্রয়োজনীয়তাঅনেক। সুতরাং, বিবাহ ও পরিবার অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। সেজন্য সুষ্ঠু পরিবার গঠন ও পরিচালনার জন্য সমাজ স্বীকৃত বিবাহের প্রয়োজনীয় অনস্বীকার্য।বিবাহ ব্যবস্থা : বিবাহ হলো এমন একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যার উপর পরিবার সমাজ বিশেষভাবে নির্ভরশীল 1 আর বিবাহ পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত। বাংলাদেশে যে বিবাহ ব্যবস্থা রয়েছে তা অনেক পরিবর্তিত রূপ। আদিম সমাজের ‘বিবাহ ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। আমাদের সমাজে বিবাহ ব্যবস্থা বিশেষভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, বিভিন্ন নিয়মনীতি, আচার অনুষ্ঠান ও রেওয়াজ ইত্যাদির মাধ্যমে বিবাহের কাজ সম্পন্ন হয়। নিম্নে বাংলাদেশের বিবাহ ব্যবস্থার ধরন উল্লেখ করা হলো :ক. একক বিবাহ : একজন পুরুষ বা একজন মহিলা দাম্পত্য জীবনযাপন করাকে একক বিবাহ ব্যবস্থা বলে।`ংলাদেশে একক বিবাহ ব্যবস্থার প্রবণতা বেশি।খ. বহুবিবাহ : যখন কোনো পুরুষ বা নারী এক বা একাধিক স্বামী বা স্ত্রী গঠন করে, তখন তাদের বহুবিবাহ বলে ।্যপাত্রপাত্রী নির্বাচন : আমাদের দেশে বিবাহ ব্যবস্থার অন্যতম উপাদান হলো পাত্রপাত্রী নির্বাচন। পাত্রপাত্রী নির্বাচনসেসব বিষয়ের উপর নির্ভরশীল।১. পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা : পরিবারের আর্থিক অবস্থার উপর বিবাহ অনেকটা নির্ভরশীল। পরিবারের অবস্থা যদি ভালো হয়, তাহলে পাত্রপাত্রীর বিয়ে অনেক সুন্দর ও নির্ঝঞ্ঝাট হয়।২. জাত ও বংশ : বাংলাদেশে বিবাহ ব্যবস্থার অন্যতম ধরন হলো জাত ও বংশ নির্বাচন। মুসলিমরা সাধারণতশেখ, সৈয়দ, চৌধুরী বংশের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। আর হিন্দুরা নিজেদের বর্ণ অপরিবর্তিত রাখে। যেমন- ব্রাহ্মণরা ব্রাহ্মণদের সাথে বিবাহ প্রথায় বিশ্বাসী। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেসব বিবাহ লক্ষ্য করা যায়। তা নিম্নরূপ : অনুলোম বিবাহ ওক.খ. প্রতিলোম বিবাহ।৩. গোষ্ঠী বিবাহ : গোষ্ঠী বিবাহ হলো একই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক পুরুষ, একাধিক স্ত্রীলোক গ্রহণ করে তাকেগোষ্ঠী বিবাহ বলে । বাংলাদেশে এ বিবাহ সাধারণত উপজাতিদের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যায় ।৪. শিক্ষাগত যোগ্যতা : শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর বিবাহ অনেকটা নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে পাত্রপাত্রীকে নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে নিজেকে উপস্থাপিত করে শহুরে পরিবারে সাধারণত মেধা, জ্ঞান, যোগ্যতা, নিপুণতা ইত্যাদির উপর নির্ভরকরে। অন্যদিকে, কৃষিকাজের দক্ষতাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর নির্ভর করে যেসব বিবাহগুলোক. সমবিবাহ ওসম্পন্ন হয় তা হলো :খ. অসম বিবাহ।৫. সামাজিক মর্যাদা : সামাজিক মর্যাদা বিবাহ ব্যবস্থায় অন্যতম একটি নিয়ামক। পরিবারের সামাজিক মর্যাদা না থাকলে বিবাহ ব্যবস্থায় কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।৬. পাত্রপাত্রীর মনোনীতি করার ধরন : আমাদের দেশে বর্তমানে পাত্রপাত্রীদের নির্বাচনকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ধরনের ব্যবস্থায় দু’টি দিক লক্ষ্য করা যায়।ক. স্বনির্বাচিত বিবাহ : পাত্রপাত্রী যখন নিজে জীবন সাথিকে মনোনীত করে, তখন তাকে Romantic Marriage বলে।খ. সংযোজিত বিবাহ : অভিভাবক বা আত্মীয়স্বজন দ্বারা পাত্রপাত্রী মনোয়ন করে বিবাহের ব্যবস্থা করা হয়, তখন এধরনের বিবাহকে সংযোজিত বিবাহ বলে।৭. যৌতুক প্রথা : আমাদের সমাজে যৌতুক প্রথা বিদ্যমান। হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের মধ্যে এ প্রথা প্রচলিত। হিন্দু সমাজে পণ প্রথায় মেয়েদের এক বিশাল অঙ্কের অর্থ প্রদান করা হয়। আর মুসলমানদের যৌতুক দেওয়া হয়টাকা বা আসবাবপত্র। দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে যৌতুকের শিকার হচ্ছে হাজার হাজার নারী আর শহুরে এলাকায় যৌতুক দেওয়াকে একটি ফ্যাশানে পরিণত হয়েছে। আমাদের সমাজে বিবাহ ব্যবস্থায় যৌতুক প্রথা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিশেষে আমরা একথায় উপনীত হতে পারি যে, বাংলাদেশ গ্রামপ্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও আদিম সমাজের তুলনায় আধুনিক সমাজের বিবাহ ব্যবস্থায় কিছুটা পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। আমাদেরসমাজব্যবস্থায় বিবাহ ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করলে আরো অনেক নিয়মকানুন আচার অনুষ্ঠান ও রেওয়াজ আছে। আমাদের সমাজে বিবাহ ব্যবস্থায় যে পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে আমাদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গলের জন্য উচিত হবে বিবাহ ব্যবস্থা আধুনিক করার জন্য ব্যাপক গবেষণা, যাতে আমরা এ থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারি।