বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিভিন্ন কারণের মধ্যে কিছু মৌলিক এবং সামাজিক উদ্দীপনা রয়েছে, যা কিছুটা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও কারণঃ বাংলাদেশের অন্যতম সমস্যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলো হলো-
1. জন্মহার ও মৃত্যুহারের অসঙ্গতিঃ বাংলাদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি সাধনের ফলে মৃত্যুহার ধীরে ধীরে হ্রাস পেলেও জন্মহার সে অনুপাতে কমছে না। এদেশে যেখানে প্রতি বছর ২.৫২% হারে জন্মগ্রহণ করে সেখানে মারা যাচ্ছে ১.৯৬%। জন্মহার ও মৃত্যুহারের এ অসঙ্গতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
2. অশিক্ষা ও অজ্ঞতাঃ সমাজ গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষাক্ষেত্রে অনগ্রসরতা ও অজ্ঞতার সাথে প্রজনন হার বৃদ্ধির ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে নারী সমাজের শিক্ষাক্ষেত্রে অনগ্রসরতা বা অশিক্ষা ও অজ্ঞতা এ দেশের জন্মহারকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
3. দারিদ্র্যঃ দারিদ্র্যজনিত অবস্থায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সন্তান লালন-পালন ব্যয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনগ্রসরতা ও অনিশ্চয়তা থাকে। এসব অনগ্রসরতা ও অনিশ্চয়তা অধিক সন্তান জন্মদানকে উৎসাহিত করে।
4. বাল্য বিবাহঃ মেয়েদের বয়ঃপ্রাপ্তির পূর্বেই বিয়ে হওয়া উচিত— সমাজে প্রচলিত এ ধারণার কারণে এদেশের গ্রামীণ সমাজে বাল্য বিবাহের প্রচলন বেশ জোরালো। এ বাল্য বিবাহ জন্মহারকে বাড়িয়ে দেয়।
5. ভৌগোলিক প্রভাবঃ ভৌগোলিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ। ফলে এদেশের ছেলেমেয়ে খুব তাড়াতাড়ি প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে। ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পথ সুগম হয়৷
6. ত্রুটিপূর্ণ সামাজিক নেতৃত্বঃ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের অনেকের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা, আন্তরিকতার ঘাটতি ও জনগণের কাছে কম গ্রহণযোগ্যতার কারণে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে জনগণ এগিয়ে আসছে না।
7. মহিলাদের নিম্ন সামাজিক মানঃ বাংলাদেশে উচ্চ প্রজনন নির্ধারণের ক্ষেত্রে পুরুষের ওপর মহিলাদের নির্ভরশীলতা তথা তাদের নিম্ন সামাজিক মান একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে।
8. কৃষিভিত্তিক সমাজঃ বাংলাদেশের কৃষিতে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য অধিক লোকের প্রয়োজন। তাই কৃষক পরিবারগুলোতে অধিক সন্তান জন্মদানের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
9. মহিলাদের কর্মসংস্থানের অভাবঃ বাংলাদেশে মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ ও পরিবেশ না থাকায় তাদেরকে গৃহে অবস্থান করতে হয়। যা অধিক সন্তান জন্মদানের সহায়ক।
10. খাদ্যাভ্যাসঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, এ দেশের লোক অধিক পরিমাণে শ্বেতসার ও অল্প পরিমাণ আমিষ জাতীয় খাবার খায়। এজন্য এদের প্রজনন ক্ষমতা বেশি যা জন্মহারকে প্রভাবিত করে।
11. ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধঃ ধর্মীয় বিশ্বাস ও সামাজিক মূল্যবোধ এদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে অধিক সন্তান জন্মদানকে উৎসাহিত করা হয়।
12. নিম্ন জীবনযাত্রার মানঃ বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক ন্যূনতম জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে পারে না। এ দেশের শতকরা ৯০ জন লোক অত্যন্ত নিম্নমানের জীবনযাপন করে। জীবনের মান সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকায় অধিক সন্তান জন্মদানে তাদের কোনো ভাবান্তর নেই।
13. নারীশিক্ষার অভাবঃ যেসব দেশে নারীশিক্ষার হার বেশি সেসব দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল নারীশিক্ষার অভাব। প্রকৃত শিক্ষা না থাকায় তারা জনসংখ্যা বৃদ্ধির কুফল সম্পর্কে বুঝতে পারে না।
14. সামাজিক নিরাপত্তার অভাবঃ জনসংখ্যা বৃদ্ধির আরেকটি কারণ হল সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। এদেশে এখনো ব্যাপক সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। বৃদ্ধ বয়সে অক্ষম হয়ে পড়লে সন্তানেরা ভরণ-পোষণ করবে- এ চিন্তা থেকে বাবা-মায়েরা অধিক সন্তান গ্রহণ করে।
15. পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষাঃ বাংলাদেশের অনেক পিতা-মাতাই পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষা করে। এ কারণে তারা তাদের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সন্তান জন্মদান করতে থাকে। এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
16. শিশুমৃত্যুর অধিক হারঃ বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার উচ্চ হওয়ার কারণে পিতা-মাতা উচ্চ সন্তান গ্রহণ করে। এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
17. পরিবার পরিকল্পনা শিক্ষার অভাবঃ পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত জ্ঞানের অভাবে এদেশের অনেক দম্পতি পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে না। এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ একাধিক এবং বিভিন্ন হতে পারে। কিছু প্রমুখ কারণের মধ্যে অন্যতম:
১. বৃদ্ধি হোক বাড়ছে শিশু জন্মদাতা: স্বাস্থ্য সেবা এবং জীবনযাপনে উন্নতি, এবং সাধারণভাবে উভয় স্তরেই বৃদ্ধি হয়েছে, যা সাধারণভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
২. মৌলিক প্রস্তুতি ও উন্নত স্বাস্থ্য সেবা: বাংলাদেশে মৌলিক প্রস্তুতি এবং উন্নত স্বাস্থ্য সেবা এখানে মানব জীবনের পরিনামকে ভাল করেছে। এটি নিয়মিত রূপে উচ্চ মৃত্যু হার এবং শিশুমৃত্যু হারের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে।
৩. জীবনযাপনে উন্নতি: বাংলাদেশে জীবনযাপনে উন্নতি হয়েছে, যার ফলে মানব জীবনের প্রসার বৃদ্ধি হয়েছে। এটি বিভিন্ন কারণে যেমন শিক্ষা, পেশা, আর্থিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ইত্যাদি সহ বিভিন্ন দিকে হতে পারে।
৪. মাধ্যমিক ও মৌলিক সংস্থার প্রভাব: বাংলাদেশে মাধ্যমিক ও মৌলিক সংস্থার কারণে বৃদ্ধি হয়েছে। মৌলিক সংস্থার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে স্বতন্ত্রভাবে অপারেট করে মহাসংঘগুলির অংশ হওয়া বৃদ্ধি এনেছে।
৫. সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন: সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সাথে সহজে সাথে সম্পর্কিত কিছু বৃদ্ধি হচ্ছে, যেমন স্ত্রীবাদ এবং পরিবারে সুরক্ষিত বাড়ি তৈরি করার প্রস্তুতি।
এই কারণের সমন্বয়ে বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। তবে, এটি একটি সৃষ্টিতের ফলাফল, এবং এর সাথে সহজে সহজে যোগাযোগ করা সহিত বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন করা গুরুত্বপূর্ণ।