বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক ধরনগুলো আলোচনার কর।

অথবা, বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক ধরনগুলো সংক্ষেপে তুলে ধর।
অথবা, বাংলাদেশের গ্রামীন ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক ধরনগুলো সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
অথবা, বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামো আনুষ্ঠানিক ধরনগুলো সংক্ষেপে বিশ্লেষণ কর।
উত্তর৷ ভূমিকা :
বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিগত দিনগুলোতে গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোর উপর নৃতাত্ত্বিক ও সমাজতাত্ত্বিক গবেষণার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞানসহ রাষ্ট্রবিজ্ঞানে কিছু কিছু গবেষণা হয়েছে। ইদানিং কালে রাষ্ট্র ক্ষমতার বিবর্তনে গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামো বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামো : গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামো বলতে আমরা প্রধানত বুঝে থাকি, যে ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামের মানুষের অধিকার ও শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। সাধারণভাবে ক্ষমতা বলতে একটি শক্তিকে বুঝায় যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তার সিদ্ধান্তকে অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে পারে।
গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক ধরন : গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক ক্ষমতার স্বরূপ আমরা কোনো সংস্থায় নির্বাচন বা মনোনয়নের মাধ্যমে পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের মধ্যে দেখতে পাই। বাংলাদেশের. গ্রামীণ সমাজের প্রেক্ষিতে ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক ধরণগুলো আলোচনা করা হলো :
ক. ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার : গ্রামীণ সমাজের ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ। তারা গ্রামীণ সম্প্রদায়ের ভোটে নির্বাচিত হন। গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে রাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রামীণ সালিস দরবারেও এদের ভূমিকা বেশ প্রভাবশালী ও গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিয়ন পরিষদ হলো স্থানীয় পর্যায়ে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান। প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ নীতির কারণে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি খানিকটা বেড়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে উপকরণ কিংবা অন্য কোনো ধরনের সাহায্য নিতে হলে ইউ.পি সদস্য বা চেয়ারম্যানের সুপারিশ লাগে। যেমন-কৃষি ঋণ পেতে হলে কৃষকদের ইউ.পি নেতৃত্বের সাহায্য নিতে হয় ।
খ. গুলিশ : রাষ্ট্র দমনমূলক প্রতিষ্ঠান পুলিশবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। এ বাহিনী গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। থানার ওসি গ্রাম পর্যায়ে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তার সাথে সম্পর্ক রাখতে পারলে গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোতে জোরালো প্রভাব খাটানো যায়।
গ. তহশিলদার : শেকড় পর্যায়ে, তহশিলদারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জমির খাজনা নেয়া ছাড়াও জমি জমার
কাগজপত্র তৈরির সময় এদের কাছে মানুষকে যেতে হয়। দেখা যায় যে, স্থানীয় ক্ষমতাবানরা তহশিলদারদের যেমন খুশি করার চেষ্টা করেন, তহশিলদাররাও নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতাবানদের মতামতে দাম দেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশে গ্রামীণ ক্ষমতা কাঠামোর আনুষ্ঠানিক কাঠামোর প্রতীয়মান হয় যে, ক্ষমতার আনুষ্ঠানিক দিকটি অর্থনেতিক বিষয়, শাসন, ক্ষমতা এবং জনগণ এ বিষয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%b8%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ae-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a6%a3-%e0%a6%b8%e0%a6%ae/