উত্তর : আলোচ্য অংশটুকু ‘হুযুর কেবলা’ শীর্ষক ছোটগল্প এমদাদ পীর সাহেবের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে পীর সাহেব আলোচ্য উক্তিটির অবতারণা করেছেন। সুফি সাহেবের কাছে কামেল পীরের সন্ধান পেয়ে এমদাদ সংসারে একমাত্র বন্ধন এবং অভিভাবক বৃদ্ধা ফুফুকে কাঁদিয়ে পীর যিয়ারতে বের হয়ে পড়ল। সুফি সাহেব তাঁর নিজের পীরের কাছে এমদাদকে নিয়ে গেলেন। পরিপাটি প্রকাণ্ড খড়ের আটচালার বৈঠকখানার মাঝখানে দেওয়াল ঘেঁষে অপেক্ষাকৃত উঁচু আসনে মেহেদী রাঙা দাড়িবিশিষ্ট একজন বৃদ্ধলোককে দেখে এমদাদ বুঝতে পারল ইনিই পীর সাহেব। সুফি সাহেব এমদাদকে পিছনে রেখে পীর সাহেবের ঘরে প্রবেশ করলেন। তাদের কুশল বিনিময়ের এক পর্যায়ে জানা গেল এমদাদকে যে সুফি সাহেব তার কাছে নিয়ে আসবে একথা তিনি আগেই জানতেন। পীর সাহেবের আগাম জানার এ ক্ষমতা দেখে উপস্থিত মুরিদগণ বিস্ময়াভূত হয়ে পড়ল। পীর সাহেব চোখ বুজে প্রায় এক মিনিট কাল ধ্যানস্থ থেকে বললেন সে এ ঘরে হাজির আছে দেখছি। পীর সাহেবের এ অলৌকিক ক্ষমতায় এমদাদ ভক্তি ও বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে একদৃষ্টে পীরের দিকে চেয়ে থাকল। তার মনে হলো পীর সাহেবের চোখ মুখ হতে এক প্রকার জ্যোতি বিকীর্ণ হচ্ছে। সুফি সাহেব এমদাদকে এগিয়ে আসার দিলে সে ধীরে ধীরে পীর সাহেবের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে অনভ্যস্ত হাতে কদমবুসি করে দাঁড়িয়ে থাকল। পীর সাহেব তখন তাকে বস বেটা, তোর ভাল হবে; আহা, বড় গরিব, ইত্যাদি প্রশান্তিসূচক বাক্য বলে একেবারে তাক লাগিয়ে দিলেন।
মন্তব্য : কৌশলে পীর সাহেবের মুরিদ বানানোর এ সাজানো নাটক দেখে তাদের ভণ্ডামির চিত্রই বেশি করে ফুটে উঠে।