উত্তর : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে পাঁচী বসিরকে বিয়ে করলে ভিখুর মধ্যে প্রবাহিত দুর্দমনীয় কামনার তাড়না তাকে হিংস্র করে তোলে। ভিখু তা সহ্য করতে না পেরে একদিন রাতের অন্ধকারে সরু ধারালো লোহার শিক দিয়ে বসিরকে খুন করে। তারপর পাঁচী এবং ভিখু বসিরের সঞ্চিত সম্পদ নিয়ে বের হয়ে যায়। রাতের অন্ধকারে পাঁচীর হাঁটতে কষ্ট হলে ভিখু তাকে কাঁধে তুলে নেয়। তারা চলে নতুন আশ্রয়ের সন্ধানে। তারা আবার ফিরে যায় আদিম সভ্যতার দিকে। গল্পের ভাষায় : হয়তো ওই চাঁদ আর এই পৃথিবীর ইতিহাস আছে। কিন্তু যে ধারাবাহিকতা অন্ধকার মাতৃগর্ভ হইতে সংগ্রহ করিয়া দেহের অভ্যন্তরে লুকাইয়া ভিখু ও পাঁচী পৃথিবীতে আসিয়াছিল এবং যে অন্ধকার তাহার সন্তানের মাংস আবেস্টনীর মধ্যে গোপন রাখিয়া যাইবে তাহা প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবীর আলো আজ পর্যন্ত তাহার নাগাল পায় নাই কোনদিন পাইবেও না।” সার্বিক আলোচনার মাধ্যমে বলা যায়, মানুষ আলোকিত সভ্যতার দিকে অগ্রসর হলেও আদিম বৈশিষ্ট্যগুলো এখনো সবার মধ্য থেকে লুপ্ত হয়ে যায় নি- সেগুলো প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে আবার মাথা তুলে দাঁড়ায় নগ্ন মূর্তিতে। ‘প্রাগৈতিহাসিক’ গল্পে ভিখু এবং পাঁচীর রওনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সে-সত্য প্রকাশিত।