জীবনানন্দের কাব্য “বনলতা সেন” হয়তো সভ্যতা ও মানবিক উন্নতির মূল বিষয়ে গভীরভাবে ভাব নিয়েছে। তার রচনায় সমাজের সমস্যা, মানবিক সম্পর্ক, সভ্যতা ও নৈতিকতা নিয়ে বিচার প্রকাশ করা হয়েছে। বনলতা সেন তার কাব্যের মাধ্যমে মানবজীবনের আন্দোলন ও প্রতিক্রিয়া নিবেদন করেন, যা প্রাকৃতিকভাবে সভ্য ও নৈতিক প্রতিষ্ঠানের অবলম্বন সম্পর্কে স্বচ্ছতার সঙ্গে পর্যালোচনা করে। তার কাব্যে মানুষের আত্মবিশ্বাস, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, নৈতিকতা, এবং মানবিক সম্পর্ক নিয়ে গভীর ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। বনলতা সেনের কাব্য ব্যক্তিগত উদ্দীপনার পাশাপাশি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উন্নতির দিকে প্রেরণা দেয়। সে মানুষের মানবিক সম্পর্কের গভীরভাবে বিচার করে, যা একটি সভ্য ও প্রগতিশীল সমাজের আবশ্যক মৌলিক গুণগুলো নির্ধারণ করে।
জীবনানন্দের “বনলতা সেন”-এর মাধ্যমে ফুটে ওঠা সভ্যতা ভাবনা:
ইতিহাসচেতনা ও সভ্যতার বিবর্তন:
- প্রাচীন মিশর:
- রানী ক্লিওপেট্রার রূপ-লাবণ্য, বিলাসবহুল জীবনযাপন, ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে জড়িয়ে পড়া – “চোখে রাজনীতির আগুন, ঠোঁটে রাজাদের গান”, “মিশরের রানী ক্লিওপেট্রা, / তার চোখে রাজনীতির আগুন”
- স্ফিংক্সের রহস্য, পিরামিডের ধ্বংসাবশেষ – “স্ফিংক্সের রহস্যময় মুখ”, “পিরামিড ভেঙেছে, ধ্বংসস্তূপে ঢাকা”
- প্রাচীন গ্রিস:
- প্লেটোর দর্শন, সক্রেটিসের বিচার, ট্রয়ের যুদ্ধের বীরত্ব – “প্লেটোর দর্শন, সক্রেটিসের বিচার”, “ট্রয়ের যুদ্ধের বীর”
- অ্যাথেন্সের স্থাপত্য, মূর্তি, নাট্যশালা – “অ্যাথেন্সের স্থাপত্য, মূর্তি, নাট্যশালা”
- মধ্যযুগীয় ইউরোপ:
- রোমান্টিক প্রেম, ধর্মীয় বিশ্বাস, যুদ্ধ ও রক্তপাত – “রোমান্টিক প্রেমের গান”, “ধর্মের আলোয় ঝলমলে”, “যুদ্ধের রক্তে ভেজা মাটি”
- গথিক স্থাপত্য, নাইটদের বীরত্বকাহিনী, গির্জার ধ্বনি – “গথিক স্থাপত্যের ছায়ায়”, “নাইটদের বীরত্বকাহিনী”, “গির্জার ঘণ্টার ধ্বনি”
- আধুনিক যুগ:
- শিল্প বিপ্লব, প্রযুক্তির অগ্রগতি, শহুরে জীবনের জটিলতা – “শিল্পবিপ্লবের ধোঁয়া”, “প্রযুক্তির অগ্রগতি”, “শহরের জটিল জীবন”
- দুই বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকা, পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি – “দুই বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকা”, “পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি”
মানব সভ্যতার চক্রাকার গতি:
- জীবনানন্দ “বনলতা সেন”-এ সভ্যতার উত্থান-পতনের চিত্র তুলে ধরেছেন।
- প্রাচীন মিশর, গ্রিস, রোমের ঐশ্বর্যের সাথে আধুনিক যুগের বিপর্যয়ের তুলনা করেছেন।
- সভ্যতা ধ্বংস হলেও, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্যের মাধ্যমে তার স্মৃতি চিরস্থায়ী হয়।
- কবি বারবার প্রশ্ন তুলেছেন – “কোথায় সেই সভ্যতা?”, “কোথায় সেই সৌন্দর্য?”