প্রাচীন যুগ এবং মধ্যযুগ, দুটি সময়কাল যা ইতিহাসে বিভিন্ন সমাজ, সাংস্কৃতিক প্রবাহ, এবং দশনের পরিবর্তনের প্রতি প্রভাবিত হয়েছে।
প্রাচীন যুগের দর্শন:
- বেদিক দর্শন (১৫০০ পূর্বে – ৬০০ পূর্বে):
- প্রাচীন ভারতের বেদিক দর্শনে বেদগুলি মূল শাস্ত্র হিসেবে প্রমুখ ছিল।
- রিগভেদ, সামভেদ, যজুর্বেদ, এবং অথর্ববেদ প্রধান বেদ ছিলেন।
- যোগদান, যাজ্ঞ, তাপস্যা, ব্রাহ্মচর্য, কর্মকাণ্ড, ইত্যাদি ছিল প্রধান দর্শনিক আদর্শ।
- উপনিষদ দর্শন (৬০০ পূর্বে – ২০০ পূর্বে):
- উপনিষদ সময়ে বেদান্ত, নৈযায়িক, সাংখ্য, যোগ, মীমাংসা, ইত্যাদি দর্শন প্রবল ছিলেন।
- আত্মতত্ত্ব, ব্রহ্মতত্ত্ব, মোক্ষ, সত্য, ইত্যাদি ছিল প্রধান আলোচনা বিষয়।
মধ্যযুগের দর্শন:
- হিন্দু দর্শন (৬০০ পূর্বে – ১৫০০ পূর্বে):
- মধ্যযুগে হিন্দু দর্শনে ভগবাদ গীতা, নাট্যশাস্ত্র, এবং পুরাণসহ বিভিন্ন গ্রন্থ প্রবল হয়।
- ভগবাদ গীতা মহাভারতে অর্জুন এবং শ্রীকৃষ্ণের সংবাদ হিসেবে প্রস্তুত হয়েছে, এবং এটি যোগকেন্দ্রিত হয়ে থাকে।
- বৌদ্ধ দর্শন (৬ষ্ঠ শতাব্দী পূর্বে – ১২ষ্ঠ শতাব্দী):
- বৌদ্ধ দর্শনে বুদ্ধদেবের বিচারধারা মূল হিসেবে প্রমুখ ছিল।
- চীন, জাপান, কোরিয়া, এবং অন্যান্য অঞ্চলে বৌদ্ধধর্ম প্রবল হয়।
- শুন্যতা, আত্মনিরীক্ষণ, চারিত্রিক আত্মসমর্পণ, ইত্যাদি বৌদ্ধ দর্শনের মৌল্যাদি ছিল।
তুলনামূলক আলোচনা:
- দর্শনের পরিবর্তন:
- প্রাচীন যুগে বেদ ও উপনিষদ দর্শনের মূল প্রধান ছিল, মধ্যযুগে বিভিন্ন শ্রুতি, স্মৃতি, পুরাণ এ
বং ভগবাদ গীতা প্রবল হয়।
- বৌদ্ধ দর্শন মধ্যযুগে একটি প্রধান দর্শন হিসেবে উত্তরাধিকার করে।
- মানবজীবন এবং দর্শন:
- প্রাচীন যুগে বৈদিক দর্শনে কর্মকাণ্ড ও ধার্মিক অধিকার প্রধান ছিল।
- মধ্যযুগে বৌদ্ধ দর্শনে শুন্যতা ও ভিন্নধর্মীয় তত্ত্বগুলি প্রধান হয়।
- পুরাণ এবং গীতা:
- মধ্যযুগে পুরাণ এবং ভগবাদ গীতা মূলত মুক্তির পথে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে এসেছে, যা প্রাচীন যুগে এতটাই মুক্তির দিকে মনোনিবেশ করেনি।
- ভারতীয় দর্শনিকবাদ:
- প্রাচীন যুগে দর্শনিকবাদে বেদান্ত সহ বিভিন্ন দর্শনিক মৌল্যাবধি গড়ে তোলা হয়।
- মধ্যযুগে ভগবাদ গীতা এবং পুরাণ এমন গ্রন্থগুলির মাধ্যমে দর্শনিক আদর্শ গড়ে তোলা হয়।
এই তুলনামূলক আলোচনা করে দেখা যায় যে, প্রাচীন এবং মধ্যযুগের দর্শনে মানবজীবন, ধর্ম, এবং দর্শনের প্রবাহে প্রধান পরিবর্তন এবং বৃদ্ধি হয়েছে।