প্রহসন হল এক ধরনের হাস্যরসাত্মক নাটক যার উদ্দেশ্য হল হাস্যরস ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মাধ্যমে দর্শকদের বিনোদন প্রদান করা।
প্রহসনের বৈশিষ্ট্য:
- অতিরঞ্জিত চরিত্র ও ঘটনা: প্রহসনের চরিত্রগুলো প্রায়শই অতিরঞ্জিত ও অসংযত হয়। ঘটনাবলীও বাস্তবতার চেয়ে অতিরঞ্জিতভাবে উপস্থাপন করা হয়।
- হাস্যকর পরিস্থিতি: প্রহসনে হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ: প্রহসনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক বিষয়াদি, যেমন – অনৈতিকতা, অনাচার, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও রক্ষণশীলতা এবং প্রাত্যহিক জীবনের ত্রুটি-বিচ্যুতিসমূহ ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
- দ্রুত गति: প্রহসনের গতি দ্রুত হয় এবং দ্রুত সংলাপের মাধ্যমে হাস্যরস সৃষ্টি করা হয়।
- সুখান্ত: প্রহসনের পরিণাম সাধারণত সুখান্ত হয়।
বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য প্রহসন:
- কুলীনকুলসর্বস্ব – রামনারায়ণ তর্করত্ন
- নীলদর্পণ – দীনবন্ধু মিত্র
- জামাইবারিক – দীনবন্ধু মিত্র
- সধবার একাদশী – দীনবন্ধু মিত্র
- মাতৃবন্দনা – উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
- হাসির গল্প – মোহাম্মদ নাসির আলী
- আকবরি আসগরি – হুমায়ূন আহমেদ
উল্লেখযোগ্য প্রহসনকার:
- রামনারায়ণ তর্করত্ন
- দীনবন্ধু মিত্র
- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
- মোহাম্মদ নাসির আলী
- হুমায়ূন আহমেদ
প্রহসনের গুরুত্ব:
- বিনোদন: প্রহসনের মাধ্যমে দর্শকদের বিনোদন প্রদান করা হয়।
- সামাজিক সমালোচনা: প্রহসনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক বিষয়াদি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মাধ্যমে সমালোচনা করা হয়।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: প্রহসনের মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।
উপসংহার:
প্রহসন বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। হাস্যরস ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মাধ্যমে দর্শকদের বিনোদন প্রদানের পাশাপাশি প্রহসন বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে সমালোচনা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করে।