[ad_1]
প্রশ্নঃ বাংলাদেশ সরকারের রাজস্বনীতির জন্য কতিপয় সুপারিশ উল্লেখ কর ।
উত্তর ৷ ভূমিকা : সরকার দেশের আয় , নিয়োগ , উৎপাদন , দামস্তর এবং স্বাভাবিক কাজ কর্ম পরিচালনার জন্য করনীতি , ব্যয়নীতি , বাজেট নীতি এবং ঋণনীতির সাহায্য নিয়ে থাকে , এটাই রাজস্বনীতি ।
রাজস্বনীতির জন্য কতিপয় সুপারিশ : বাংলাদেশ সরকারের রাজস্বনীতির জন্য কতিপয় সুপারিশ উল্লেখ করা হলো :
( i )সরকারি আয় : সরকারি আয় কর সরকারি আয়ের প্রধান উৎস । ফলে কর নীতিকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আয় ও সম্পদের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে প্রণয়ন করা দরকার । এ উদ্দেশ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা যায় ।
১. বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আয়ের অতি সামান্য অংশই প্রত্যক্ষ কর হতে আহরণ করা হয় । এদেশের কর ‘ রাজস্বের প্রায় ৭২ শতাংশ হলো পরোক্ষ কর । যার বোঝা দেশের দরিদ্র জনগণের উপর বেশি পড়ে । এটি সামাজিক বিচারের পরিপন্থী । দেশের কর কাঠামোতে আয়কর , ভূমি রাজস্ব , রেজিস্ট্রেশন ফি , স্ট্যাম্প , শুল্ক ইত্যাদি প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ।
২. বাংলাদেশের দেশজ উৎপাদনের প্রায় ২০ শতাংশ কৃষিখাত থেকে পাওয়া যায় । কিন্তু কৃষিখাতকে এখনো পর্যন্ত কর ব্যবস্থার আওতায় আনা হয় নি । দেশের কৃষিখাতকে কর ব্যবস্থার আওতায় আনয়নের জন্য ব্যবস্থা নেয়া দরকার ।
৩. বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ধনী কৃষক ও বেপারি আছে যাদেরকে এখনো কর ব্যবস্থার আওতায় আনা হয় নি । এদের উপর আয়কর ধার্য করে আয়করের ভিত্তি সম্প্রসারিত করা যায় ।
৪. মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে রপ্তানিমুখী শিল্পের উন্নয়নের জন্য ঐসব শিল্পের প্রয়োজনীয় দ্রব্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস করতে হবে ।
৫. বিলাসদ্রব্যের উপর করের হার বৃদ্ধি করতে হবে । বাংলাদেশে বর্তমানে এক শ্রেণীর নব্য বণিক সম্প্রদায় বিলাসদ্রব্যের উপর প্রচুর অর্থ ব্যয় করে । এসব দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি করা উচিত ।
৬. বাংলাদেশে কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা খুবই বেশি । কর ফাঁকি বন্ধ করার উদ্দেশ্যে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । এক্ষেত্রে দেশের দুর্নীতি দমন বিভাগকে ব্যবহার করা যায় ।
( ii ) সরকারি ব্যয় : সরকারি ব্যয় রাজস্বনীতির অন্যতম হাতিয়ার । সরকারি ব্যয়কে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পরিচালিত করার উদ্দেশ্যে নিম্নরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় :
১. অনুৎপাদনশীল প্রশাসনিক ব্যয় সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা প্রয়োজন । এতে বাজেটের রাজস্বখাতে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হবে ।
২. প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয়বাহুল্য হ্রাস করা প্রয়োজন ।
৩. আর্থসামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে ।
৪. দ্রুত বেসরকারীকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তুকি বাবদ ব্যয় হ্রাস করা যেতে পারে । নিয়মিত ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত রুগ্ন শিল্পগুলোকে টিকিয়ে রাখার বোঝা থেকে জাতিকে মুক্ত করা দরকার ।
৫. উন্নয়নশীল দেশে সরকারি খাতে অপচয়ের পরিমাণও কম নয় । সরকারি কর্মচারীদের অনাবশ্যক বিদেশ ভ্রমণের পিছনে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয় । এ ধরনের অপচয় অবিলম্বে বন্ধ করা দরকার ।
উপসংহার : সরকারের রাজস্বনীতি বাস্তবায়ন করা হয় বাজেট নীতির মাধ্যমে ।
[ad_2]