প্রশ্নঃ বাংলাদেশে বিনিয়োগের নির্ধারকসমূহ কী কী ?

[ad_1]

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে বিনিয়োগের নির্ধারকসমূহ কী কী ?

উত্তর ভূমিকা : বাংলাদেশের বিনিয়োগ কতিপয় বিষয় দ্বারা নির্ধারিত হয় । উক্ত নির্ধারকগুলো বিনিয়োগ নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । K বাংলাদেশে বিনিয়োগের নির্ধারকসমূহ : নিম্নে বাংলাদেশের বিনিয়োগের নির্ধারকসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. মূলধনের প্রাচুর্যতা : দেশে মূলধনের পরিমাণ পর্যাপ্ত হলে মূলধন সহজেই পাওয়া যায় । ফলে মূলধনের যোগান দাম কমে এবং উৎপাদন খরচও কমে । মুনাফার পরিমাণ বাড়ে । এর ফলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হয় ।

২. উদ্যোক্তা শ্ৰেণী : উদ্যোক্তা দক্ষ হলে ব্যবস্থাপনা খরচ কম হয় । ফলে গড় উৎপাদন খরচ কমে এবং বিনিয়োগ বাড়ে ।

৩. প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ : পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ থাকলে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে । অপরপক্ষে , যন্ত্রপাতি , কলকারখানা ও পর্যাপ্ত মূলধন থাকলেও যদি খনিজ সম্পদ তথা গ্যাস ও তেল কম থাকে তাহলে বিনিয়োগ কম হবে ।

৪. মানব সম্পদ : মানব সম্পদ যদি দক্ষ হয় তাহলে দেশের মূলধন ও প্রাকৃতিক সম্পদকে দক্ষতার সাথে উৎপাদন ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে সাহায্য করে । ফলে বিনিয়োগ বাড়ে । মানব সম্পদ অদক্ষ হলে বিনিয়োগ কমে ।

৫. আয় স্তর : আয় স্তর বেশি হলে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেশি হয় । ফলে বিক্রয়ের পরিমাণ বাড়ে এবং মুনাফা বৃদ্ধি পায় । বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মুনাফার প্রত্যাশায় বিনিয়োগ বাড়বে । আয় স্তর কম হলে বিনিয়োগ কমবে ।

৬. ভোগ প্রবণতা : ভোগ প্রবণতা বেশি হলে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে , ফলে বিক্রয়ের পরিমাণও বাড়ে । যার ফলে বুনাকা বাড়বে এবং বিনিয়োগও বাড়বে ।

৭. আর্থসামাজিক অবকাঠামো : আর্থসামাজিক অবকাঠামো তথা যোগাযোগ ব্যবস্থা , পরিবহন ব্যবস্থা , শিক্ষা , ব্যাংক ও বীমা ব্যবস্থাসহ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হয় । ফলে ব্যবসায়ীদের মুনাফার প্রত্যাশা বাড়ে এবং বিনিয়োগও বাড়ে ।

৮. বৈদেশিক সম্পর্ক ও বহির্বাণিজ্য : বৈদেশিক সম্পর্ক ভালো থাকলে বহির্বাণিজ্য সম্প্রসারিত হয় । ফলে রপ্তানির ক্ষেত্র প্রসারিত হয় । ব্যবসায়িক মুনাফার প্রত্যাশা বাড়ে এবং বিনিয়োগও বাড়ে ।

৯ , রাজস্বনীতি : করনীতি এবং ব্যয়নীতি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করে । ভর্তুকি বাড়লে এবং কর হার হ্রাস করলে ব্যবসায়ে মুনাফা বাড়ে ফলে বিনিয়োগ বাড়ে । পক্ষান্তরে ভর্তুকি কমালে এবং কর হার বাড়ালে মুনাফা কমে যায় ফলে বিনিয়োগ ও কমে ।

১০. আর্থিক ও ঋণনীতি : কোন দেশের আর্থিক ও ঋণনীতি বিনিয়োগকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে । সম্প্রসারণমূলক ঋণনীতি এবং সহজ ঋণ পরিশোধ নীতি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করে । পক্ষান্তরে , সংকোচনমূলক ঋণনীতি এবং কঠিন ঋণ পরিশোধ নীতি বিনিয়োগকে হ্রাস করে ।

১১ , উন্নত প্রযুক্তি : উন্নত প্রযুক্তি উৎপাদন ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং উৎপাদন খরচ কমায় । ফলে মুনাফা বাড়ে এবং 2012 বিনিয়োগও বাড়ে ।

১২. আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক নিরাপত্তা : দেশের আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক নিরাপত্তা দারুণভাবে বিনিয়োগকে প্রভাবিত করে । অন্যান্য উপাদান অনুকূলে থাকলেও যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকে তাহলে বিনিয়োগকারীরা নিরূৎসাহিত হয় । পক্ষান্তরে , সমাজে জানমালের নিরাপত্তা থাকলে বিনিয়োগ বাড়বে ।

১৩. বিশ্বশান্তি : বর্তমানে বিশ্বকে একটি Global village বা একটি গ্রামের সাথে তুলনা করা হয় । বিশ্বময় শান্তি বিরাজ করলে ব্যবসায় বাণিজ্য ভালোভাবে চলে এবং মুনাফাও বাড়ে ফলে বিনিয়োগও বাড়ে । বিশ্বে অশান্তি থাকলে বিনিয়োগ কমে ।

উপসংহার : বিনিয়োগ নির্ধারণের ক্ষেত্রে উক্ত নির্ধারকের অন্য কোন বিকল্প নেই । সুতরাং বিনিয়োগ নির্ধারণের জন্য উক্ত নির্ধারকগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

[ad_2]