[ad_1]
প্রশ্নঃ প্রকৃত মজুরি কী কী বিষয়ের উপর নির্ভরশীল ?
উত্তর ৷ ভূমিকা : শ্রমিক তার আর্থিক মজুরি দ্বারা যে পরিমাণ দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করতে পারে এবং কর্মক্ষেত্র থেকে যেসব আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করে এদুয়ের সমষ্টি হলো প্রকৃত মজুরি । প্রকৃত মজুরি : শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি যেসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে তা নিম্নরূপ :
১. আর্থিক মজুরি : অন্যান্য অবস্থা স্থির থেকে যদি শ্রমিকের আর্থিক মজুরি বাড়ে তবে তার প্রকৃত মজুরিও বাড়বে । যেমন দ্রব্যমূল্য স্থির থেকে যদি কোন শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি পায় তাহলে সে পূর্বের চেয়ে অধিক দ্রব্য ও সেবা ক্রয় করতে পারবে ।
২. দামস্তর : অন্যান্য অবস্থা থেকে যদি দামস্তর বাড়ে তবে প্রকৃত মজুরি কমবে এবং দামস্তর যদি হ্রাস পায় তবে প্রকৃত মজুরি বাড়বে ।
৩. কাজের স্থায়িত্ব : চাকরি নিয়মিত এবং স্থায়ী হলে সেক্ষেত্রে আর্থিক মজুরি কম হলেও প্রকৃত মজুরি বেশি । কেননা সেক্ষেত্রে শ্রমিকের বেকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না ।
৪. কাজের সময় : আর্থিক মজুরি অপরিবর্তিত থেকে শ্রমিকের কাজের সময় যদি বেশি হয় তাহলে প্রকৃত মজুরি কম হবে এবং কাজের সময় কম হলে প্রকৃত মজুরি বেশি হয় । কেননা শ্রমিক অবসর সময়ে অন্য কোন কাজ করে অতিরিক্ত আয় করতে পারে ।
৫. কাজের প্রকৃতি : ঝুঁকিপূর্ণ , কঠিন ও অপ্রীতিকর কাজে শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি কম । যেমন- লবণ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকের কুষ্ঠরোগ হতে পারে । তাই এ কাজে প্রকৃত মজুরি কম । কিন্তু আরামদায়ক , ঝুঁকিহীন ও প্রীতিকর কাজে প্রকৃত মজুরি বেশি হবে ।
৬. আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা : যেসব কাজে আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা যেমন- বাসস্থান , যানবাহন , চিকিৎসা প্রভৃতি সুবিধা পাওয়া যায় । সেসব কাজে প্রকৃত মজুরি বেশি হবে ।
৭. পদোন্নতির সুবিধা : যেসব কাজে পদোন্নতির সুযোগ আছে তাতে প্রকৃত মজুরি বেশি এবং যেসব কাজে উক্ত সুযোগ নাই তাতে প্রকৃত মজুরি কম ।
৮. পেশাগত খরচ : অনেক পেশা যেমন- ডাক্তারি পেশায় পেশাগত খরচ বেশি বলে প্রকৃত মজুরি কম হয় । ৯. বাড়তি আয়ের সুযোগ : যে কাজে বাড়তি আয়ের সুযোগ আছে তার প্রকৃত মজুরি বেশি । যেমন- শিক্ষকের গৃহশিক্ষকতা করা , পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করা ইত্যাদি কাজ করে অতিরিক্ত আয় করতে পারে বলে তার প্রকৃত মজুরি বেশি হয় ।
১০. শিক্ষাগত ব্যয় : যেসব পেশায় শ্রমিকের ব্যয়বহুল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় সেসব ক্ষেত্রে শিক্ষাগত ব্যয়ের তুলনায় প্রকৃত মজুরি কম । যেমন- ডাক্তার ।
১১. সামাজিক মর্যাদা : যেসব পেশায় সামাজিক মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকে সেসব পেশায় আর্থিক মজুরি কম হলেও প্রকৃত মজুরি বেশি । যেমন- একজন শিক্ষক ও একজন পিয়নের বেতন সমান হলেও শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা বেশি বলে তার প্রকৃত মজুরি বেশি ।
১২. পরোক্ষ কর : সরকার পরোক্ষ কর আরোপ করলে দামস্তর বৃদ্ধি পায় ফলে প্রকৃত মজুরি হ্রাস পায় ।
১৩. সামাজিক নিরাপত্তা : যেস্ব পেশায় সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা যেমন- অসুস্থতা , পঙ্গুত্বের জন্য আর্থিক সাহায্য যেসব পেশায় আর্থিক মজুরি কম হলে প্রকৃত মজুরি বেশি হবে ।
১৪. অবসরকালীন সুবিধা : যেসব পেশায় অবসরকালীন সুবিধা যেমন- পেনশন , বোনাস ইত্যাদির সুবিধা আছে তাতে প্রকৃত মজুরি বেশি ।
১৫. শিক্ষাগত প্রশিক্ষণ : যেসব পেশায় শ্রমিকের পেশাগত শিক্ষাও প্রশিক্ষণ দেয়া হয় সেসব পেশায় প্রকৃত মজুরি বেশি ।
উপসংহার : সুতরাং শ্রমিকের প্রকৃত অবস্থার সঠিক মূল্যায়ন করতে হলে উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর ভিত্তিতে বিবেচনা করা প্রয়োজন ।
[ad_2]