উৎস : আলোচ্য পঙক্তিদ্বয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঐকতান’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : বিশ্বভাবনায় অবগাহনের স্বীয় ভাবনার প্রকাশ করতে গিয়ে কবি আলোচ্য উক্তিটির অবতারণা করেছেন।
বিশ্লেষণ : কবি বিশ্বায়ত জ্ঞানলাভ করতে পারেননি বলে জীবন সায়াহ্নে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাই বিশ্বের ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিচিত্র প্রকৃতি, মনুষ্যকীর্তি, সাহিত্যসংস্কৃতি ও সভ্যতা সম্পর্কে জানার জন্য গ্রন্থের আশ্রয় নিয়েছেন। কারণ বাস্তব জগতে ভ্রমণের সময় অর্থ ও সুযোগ সীমিত। তবে এ ক্ষেত্রেও বাস্তবতার প্রত্যাশা পূরণ অসম্ভব। দেশের মানচিত্রগত ভিন্নতা, অবাধ চলাচলের সুযোগ সীমিত, সাহিত্য সংস্কৃতি ও ভাষাগত পার্থক্যের কারণে বিশ্বচেতনার পরিপুষ্টির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ভাবুক কবির পক্ষে এমন পার্থিব বাধা যথেষ্ট নয়। কারণ ভাবুক কবির কল্পনা ও ভাবরাজ্যের পরিসীমা নেই। নেই কোন জাতিগত বৈষম্য ও ভৌগোলিক বাধা। কবি আত্মানুভূতির মাধ্যমে সকলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। অনুভূতির কোন দেশ কাল ভেদ নেই । তাই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কল্পলোকের ডানায় ভর করে পৃথিবী পরিভ্রমণ করেছেন। কবি নিজের চেতনালোকের মাধ্যমে অনুভব করেছেন পৃথিবীর সকল মানুষের চাওয়া পাওয়া হাসি কান্না একই। মানচিত্রের সীমানা অনুভূতির জগতে অচল। সেজন্য কবি বিশ্বের সাথে একাকার হতে চেয়েছেন।
মন্তব্য : কবির বিশ্বভাবনার আকুতি চরণ দুটিতে মূর্ত হয়ে উঠেছে।