প্রশ্ন ১৭॥ প্রত্যয় মূল্যায়নের মানদন্ড কী?
অথবা, ধারণা মূল্যায়নের মানদণ্ড কী?
অথবা, ধারণা মূল্যায়নের মাপকাঠি আলোচনা কর।
উত্তরঃ ভূমিকা : প্রত্যয় মূল্যায়ন গবেষকের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি বিষয়। প্রত্যয় মূল্যায়নের বিভিন্ন মানদণ্ড রয়েছে। সাধারণত তিনটি প্রক্রিয়ায় এই মানদণ্ড বিচাৰ্য। এই মানদণ্ডগুলো হলো প্রত্যয়ের পরিধি, প্রত্যয়ের স্পষ্টতা এবং প্রত্যয়ের নিয়মতান্ত্রিকতা।
প্রত্যয় মূল্যায়নের মানদণ্ড : নিম্নে প্রত্যয় মূল্যায়নের মানদণ্ড সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
১. প্রত্যয়ের পরিধি : প্রত্যয়ের পরিধি বলতে এখানে প্রত্যয়ের দ্বারা ব্যক্ত পরিস্থিতির ব্যাপকতাকে বুঝানো হয়েছে। সাধারণত প্রত্যয় যত বিমূর্ত হবে তার পরিধি তত ব্যাপক হবে। উদাহরণস্বরূপ ‘জীবন্ত সত্তা’ প্রত্যয়টির কথা বলা যেতে পারে। ‘জীবন্ত সত্তা’ প্রত্যয়টি ‘মানুষ’ প্রত্যয়টির চেয়ে পরিধিগত দিক থেকে ব্যাপকতর। আবার সামাজিক অসমতার কথা বলা যেতে পারে। সামাজিক অসমতা’ প্রত্যয়টি একটি ব্যাপকতর ধারণা। মর্যানাভিত্তিক অসমতা, সম্পত্তিভিত্তিক অসমতা ইত্যাদি স্তরভিত্তিক অসমতার চেয়ে সামাজিক অসমতা’ প্রত্যয়টি আরো বেশি সুনির্দিষ্ট এবং ব্যাপকতর।
২. প্রত্যয়ের স্পষ্টতা : প্রত্যয়ের স্পষ্টতা নির্ভর করে প্রত্যয়ের অর্থগত সুনির্দিষ্টতা এবং প্রত্যয়ের বাস্তব অভিজ্ঞতার পর্যায়ে পরিমাপযোগ্য হিসেবে নিয়ে আসার সামর্থ্যের উপর। উদাহরণস্বরূপ ‘সামাজিক গোষ্ঠীর’ কথা বলা যেতে পারে। ‘সামাজিক গোষ্ঠী’ যত সহজে পরিমাপ করা যায়, ‘সুন্দর’ প্রত্যয়টি তত সহজে পরিমাপ করা যায় না। কেননা ‘সুন্দর’ প্রত্যয়টি সম্পর্কে ব্যক্তিভেদে অর্থে ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
৩. প্রত্যয়ের নিয়মতান্ত্রিকতা : প্রত্যয়ের নিয়মতান্ত্রিকতা প্রত্যয় মূল্যায়নের তৃতীয় মানদণ্ড। এর অর্থ হলো প্রত্যয়টি কী পরিমাণে একটি তত্ত্বগত কাঠামোতে সংযোগ করা যেতে পারে। একটি তত্ত্বে বা প্রস্তাবনায় প্রত্যয়টির ব্যবহারের প্রকৃতি ও মাত্রার উপর এর নিয়মতান্ত্রিকতা নির্ভর করে। বস্তুত প্রত্যয়টি একটি তত্ত্বে বা প্রস্তাবনায় যে প্রেক্ষাপটে ব্যবহৃত হয় তা জানতে পারলে প্রত্যয়টির অর্থ অধিক বোধগম্য হতে পারে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উপরোক্ত মানদণ্ড তিনটি দ্বারা প্রত্যয় বা ধারণা মূল্যায়ন করা হয়।