অথবা, প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।
অথবা, প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দাও।
অথবা, প্রকল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
অথবা, প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
উত্তর।। ভূমিকা : একটি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু হয় একটি সমাধানযোগ্য সমস্যা দিয়ে। সমস্যা স্থির করার পর তার সমাধানের জন্য একজন মনোবিজ্ঞানী পরীক্ষণ বা গবেষণা করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু পরীক্ষণটির রূপরেখা কি হবে সে
বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রথমে সমস্যার একটি সম্ভাব্য সমাধান কল্পন করে নিতে হয়। এ কল্পিত বা অনুমোদিত সমাধানই হচ্ছে Hypothesis বা প্রকল্প।
একটি ভালো প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য নিম্নে একটি ভালো প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা হল :
১. সুনির্দিষ্টতা ও স্পষ্টতা : প্রকল্পের বক্তব্য অবশ্যই সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট হতে হবে। অস্পষ্ট প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঘটনার কোনরূপ ব্যাখ্যা দিতে পারে না।
উদাহরণ : শিল্পকারখানায় উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যদি বলা হয়, কোন একটা কারণে উৎপাদন কমে গেছে, তাহলে কোন স্পষ্ট চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারে না। অতএব, প্রকল্প কখনও এরূপ হতে পারে না।পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের অযোগ্য কোন বক্তব্য প্রকল্প নয়।
প্রমাণযোগ্যতা : প্রকল্পটি এমন হতে হবে যেন পরীক্ষার মাধ্যমে তার সত্যতা বা অসত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়।
উদাহরণ : কোন ব্যক্তি হঠাৎ স্বাভাবিক আচরণ শুরু করলে যদি তার কারণ হিসেবে ভূত-প্রেতের প্রভাবের কথা বলে প্রকল্প গঠন করা হয়, তাহলে তা বাস্তবের সাথে যাচাই করা সম্ভব হবে না।
৩. প্রাসঙ্গিকতা : কোন ঘটনাকে ব্যাখ্যা করার উদ্দেশ্যে প্রকল্প তৈরি করা হয়। কাজেই যে ঘটনা ব্যাখ্যা করার জন্য প্রকল্পের উদ্ভব তার সাথে একে প্রাসঙ্গিক হতে হবে। নতুবা প্রকল্পটি সুসংগতভাবে ঘটনা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হবে না।
উদাহরণ : কোন ছাত্র দেরি করে আসার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যদি বলে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের কারণে তার আসতে দেরি হয়েছে তবে তা প্রাসঙ্গিক হবে না।
৪. সহজবোধ্য ও গ্রহণযোগ্যতা : প্রকল্প যত সহজ হবে তার উপর গবেষণাও তত সহজ হবে। প্রকল্প জটিল হলে তার গবেষণাও জটিল হবে। তাই আমরা একটি সমস্যার যদি দু’টো প্রকল্প থাকে, তাহলে জটিলটি গ্রহণ না করে সহজটা গ্রহণ করব।
৫. যৌক্তিকতা : অযৌক্তিক কোন কথা বা বক্তব্য প্রকল্প হিসেবে গৃহীত হতে পারে না। কেননা, এতে প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কোন মূল্য থাকে না।
উদাহরণ : কারও মুখ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে যদি মনে করা হয় যে,লোকটির মুখের ভিতর আগুন লেগেছে,তাহলে এরূপ প্রকল্প হবে অযৌক্তিক।
৬. সত্যতা বা বাস্তবসম্মত : অবাস্তব কোন ঘটনা বা বক্তব্যে প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক যুক্তি ক্ষুণ্ন হয়। প্রকল্পকে অবশ্যই বাস্তবতার নিরিখে যাচাই করতে হবে।
উদাহরণ : চন্দ্রগ্রহণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যদি বলা হয়, কোন দানব চাঁদটাকে গিলে খায়। তবে এটা অবাস্তব, অসার হবে। এ জাতীয় প্রকল্প কখনই গ্রহণীয় নয়।
উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, উল্লিখিত নীতিসমূহ গ্রহণ করলে প্রকল্পটি অবশ্যই একটি ভালো প্রকল্প হবে। তাই কোন প্রকল্প গ্রহণ করার পূর্বে এসব বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া দরকার। কারণ এ সকল বৈশিষ্ট্য যদি কোন প্রকল্পে বিদ্যমান থাকে তাহলে সেই প্রকল্পই ঘটনাটি সম্পর্কে সঠিক উত্তর দিতে পারবে।


