উত্তর ঃ ভূমিকা ঃ সংশোধনমূলক কার্যক্রমের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো প্যারোল। অপরাধীদের প্রাপ্য শাস্তির কিছুটা দান করে সংশোধন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে পরিচালিত ব্যবস্থাকেই মূলত প্যারোল বলে। প্যারোল একজন প্যারোল অফিসারের তত্ত্বাবধানে প্যারোলকে সার্বিক তত্ত্বাবধানে সম্পদিত হয়ে থাকে। ফলে অপরাধীদের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। তাই প্যারোলের জনপ্রিয়তা ব্যাপকহারে বেড়েই চলেছে।
প্যারোলের সাধারণ ধারণা : শর্তসাপেক্ষ কয়েকদিনের মুক্তিদানের কার্যক্রমকেই মূলত প্যারোল হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। প্যারোলের শর্তপূরণে ব্যর্থ হলে কয়েকদিনে পূর্ণমাত্রায় সাজা ভোগ করতে হয়। আর এ ব্যবস্থার অধীন কয়েদিকে প্যারোল হিসেবে সম্বোধন করা হয়।
প্যারোল ঃ প্যারোল হচ্ছে অপরাধ সংশোধনের এমন এক বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থা যাতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী বা অপরাধীর আংশিক দণ্ড ভোগের পর শর্তসাপেক্ষ মুক্তি দেওয়া হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ক্যাপ্টেন আলেকজান্ডার মেকেনকি নামক ইংল্যান্ডের এক অধিবাসী সর্বপ্রথম এ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। ১৮৭৭ সালে এ পদ্ধতি আমেরিকায় প্রবর্তিত হয় ও পরে বিশ্বের অন্যত্র সম্প্রসারিত হয়।
→ প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
মনীষী ফ্রিডল্যান্ডার বলেছেন, “প্যারোল হচ্ছে শাস্তিপ্রাপ্ত অপরাধীকে শাস্তির মেয়াদ পূর্ণ হবার পূর্ববেই শর্তসাপেক্ষে মুক্তিদান প্রক্রিয়া; এ শর্ত যদি ভঙ্গ করে তবে পুনরায় শাস্তি ভোগের জন্য কারাগারে প্রেরণ করা হয়।”
অন্যদিকে অপরাধ বিজ্ঞানী ড্রেসলারের অভিমত অনুযায়ী, “প্যারোল বলতে এমন এক সংশোধনমূলক ব্যবস্থা বুঝায় যার মাধ্যমে অপরাধীকে কিছুদিন শাস্তিভোগের পর সংশোধন ও পুনর্বাসনের জন্য প্যারোল কর্মীর তত্ত্বাবধানে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়া হয়।
সুতরাং, প্যারোল হচ্ছে অপরাধীদের শর্তসাপেক্ষে মঞ্জুরকৃত সংশোধনমূলক ব্যবস্থা। ‘অপরাধীদের শাস্তি নয় বরং সংশোধনের মাধ্যমে সমাজ জীবনে পুনর্বাসন করা সম্ভব। এই ধারণাকেই ধারণ করে প্যারোলের সূত্রপাত ঘটে থাকে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্যারোেল অপরাধীকে মুক্তভাবে জীবনযাপনের মাধ্যমে সংশোধনের যাবতীয় ব্যবস্থা করে থাকে। আধুনিক বিশ্বে অপরাধীকে সম্পূর্ণরূপে ভালো করার মাধ্যমে অপরাধের উৎস প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি ইচ্ছা পোষণ করে আর এক্ষেত্রেই প্যারোলের অগ্রযাত্রা তাই সন্ত্রাস দমন, সুন্দর ও সাবলীল সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা
আইন ব্যবস্থায় প্যারোলের অন্তর্ভুক্তিকরণ এখন সময়ের বড় দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।