“পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল।”- ব্যাখ্যা কর।

উৎস : ব্যাখ্যেয় অংশটুকু প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ বিরচিত ‘বনলতা সেন’ শীর্ষক কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গ : এখানে জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে কবির মনে যে স্বস্তি ও সুখের অনুভূতি ধরা দেয় সে সম্পর্কে চিত্রময় বর্ণনা ফুটে উঠেছে।
বিশ্লেষণ : পৃথিবীর বুকে মানুষের পদচারণা শুরু হয়েছে বহুদিন ধরে। কবি মানবসভ্যতার প্রাচীন পর্ব থেকে আধুনিককাল পর্যন্ত ইতিহাস ও ভূগোলের মধ্যে তন্ন তন্ন করে নিজের স্বস্তি ও সুখের সন্ধান করেছেন। ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে তিনি ফিরেছেন দ্বারে দ্বারে। হাল ভাঙা নাবিকের মতো দিশেহারা হয়ে খুঁজেছেন অনিশ্চিত সম্ভাবনাকে। কিন্তু কোন হদিস পাননি কোথাও। অবশেষে তিন৷ উত্তরবঙ্গের নাটোরে গিয়ে সন্ধান পেয়েছেন তাঁর মানস প্রতিমার। কল্পিত বনলতা সেন-ই কবির কাঙ্ক্ষিত সুখের নীড়। তার কাছেই তিনি পেয়েছেন দু’দণ্ড শান্তি। ইতোমধ্যে জীবনে দেখা দিয়েছে সায়াহ্ন। দিনের শেষে শিশিরের মতো নিঃশব্দে নেমে এসেছে সন্ধ্যা। দিনের রৌদ্র নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। এসময় পৃথিবীর সব রঙ যায় নিভে। সেই নিস্তব্ধ জীবন-সন্ধ্যায় মন ভরে উঠে কত কথায়। গল্পের পাণ্ডুলিপিরা এসে মনের মণিকোঠায় ভিড় জমায়। জোনাকির স্বল্প আলোয় ঝিলমিল করে উঠে কবির সমস্ত সত্তা।
মন্তব্য: কবির অনুভূতিপ্রবণ মন এখানে কল্পনার রঙিন পাখায় ভর করে আকাশচারী হয়ে উঠেছে। জীবনের সুখ ও স্বস্তিকে দেখেছেন তিনি কাব্যিক দৃষ্টিভঙ্গিতে।

https://topsuggestionbd.com/%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%9c%e0%a7%80%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%a8%e0%a7%8d/